পাকিস্তান যে নতুন ব্লকের কথা বলছে সেখানে যেতে বাধা নেই বাংলাদেশের
ভারতকে বাদ দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় পাকিস্তান যে নতুন ব্লক তৈরির কথা বলছে সেখানে বাংলাদেশ চাইলে যেতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
আজ (বুধবার) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেছেন উপদেষ্টা।
বিজ্ঞাপন
তৌহিদ হোসেন বলেন, ভারতকে বাদ দিয়ে নেপাল বা ভুটানের পক্ষে পাকিস্তানের সঙ্গে গ্রপিং করা সম্ভব না। আমাদের কথা বাদ দিলাম। আমাদের পক্ষে সম্ভব। কিন্তু নেপাল বা ভারতের পক্ষে সম্ভব না। উনি (পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার) একটা কথা বলেছেন, কোনো এককালে হয়তো এটার অগ্রগতি হতেও পারে।
বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তান নিয়ে সম্প্রতি একটি ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগ শুরু হয়েছে। এটি এ অঞ্চল ও এ অঞ্চলের বাইরের অন্যান্য দেশকে নিয়ে আরও সম্প্রসারিত হতে পারে। গত বুধবার ‘ইসলামাবাদ কংক্লেভ’ ফোরামে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার এ মন্তব্য করেছেন। ইসহাক দার বলেন, আমরা একজন জিতলে, অন্যজন হারবে- এমন নীতির পক্ষে নই।
বিজ্ঞাপন
ভারতে অবস্থানরত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তৃতীয় দেশে স্থানান্তরের আলোচনা আছে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিছু জানে কি না এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমরাও আপনাদের মতো শুনেছি। এটাতে আমার কিছু করার নেই। বাংলাদেশেরও কিছু করার নেই। আমরা চাই উনি ফেরত আসুক।
র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা তোলার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তৌহিদ হোসেন বলেন, আর এটা প্রক্রিয়ার ব্যাপার, দেখা যাক আমরা কতটুকু করতে পারি। র্যাবের কাজে স্পষ্টত অনেক অগ্রগতি হয়েছে। এটা অনেকে স্বীকার করেন। গত ১৫ বছরে র্যাব যা করেছে সে তুলনায়…কিছু অভিযোগ থাকতে পারে। কিন্তু অনেক অগ্রগতি হয়েছে। এই সরকারের প্রচেষ্টার কোনো অভাব নেই। কারও যেন মানবাধিকার এভাবে লঙ্ঘিত না হয়, কেউ যেন গুম না হয়; কেউ যেন বিচারবর্হিূভূত হত্যার স্বীকার না হয়, এ ব্যাপারে আমাদের শতভাগ কমিটমেন্ট আছে।
৫ আগস্ট পরবর্তীতে বাংলাদেশের কোনো শাসকের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার সম্ভবনার প্রশ্নে উপদেষ্টা বলেন, আসলে আমার তো মনে হয় না এ ধরনের কোনো সম্ভবনা আছে। কারণ, আমি দেখতে পাচ্ছি না এ রকম কোনো অভিযোগ আসছে।
বিগত সরকারের সময় থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জেনারেল সিকিউরিটি অব মিলিটারি ইনফরমেশান এগ্রিমেন্ট (জিসোমিয়া) নিয়ে আলোচনা চলছে। চুক্তির অগ্রগতি নিয়ে তৌহিদ হোসেন বলেন, এটা বরং আরেকটু অগ্রগতি হোক। এটা নিয়ে তো আলোচনা চলছে অনেক দিন ধরে।
আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) বলছে, গত ১১ মাসে বাংলাদেশে ২৯ জন বিচারবর্হিভূত হত্যার স্বীকার হয়েছে। এটা নিয়ে উন্নয়ন সহযোগিতা ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো কোনো বার্তা দিচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এটার বিস্তারিত তথ্য আমি বলতে পারব না। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভালো বলতে পারবে। কোনো প্রতিষ্ঠান আমার লেভেল পর্যন্ত, অন্তত এখন পযন্ত অভিযোগ পাইনি।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কার্যালয় ৪০টি সুপারিশ দিয়েছিল। সেখানে র্যাব-ডিজিএফআই বিলুপ্ত করার কথা বলা হয়েছিল। সেই সুপারিশ অন্তর্বর্তী সরকার আমলে নেবে কিনা- জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, ডিজিএফআইয়ের মতো প্রতিষ্ঠান পৃথিবীর প্রত্যেকটা দেশে আছে। এটা তারা বললেই তো হবে না। ৪০টি সুপারিশ দিয়েছে তারা, যেগুলো আমাদের এবং আমাদের পরের সরকারের কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হবে, সেগুলো তারা করবে।
এনআই/এনএফ