ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টা মামলার প্রধান অভিযুক্ত শুটার ফয়সালের বাবা হুমায়ূন কবিরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। র‍্যাব তাকে গ্রেপ্তারের পর ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করেছে। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ডিবি-দক্ষিণ) মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, ফয়সালের বাবাকে র‍্যাব গ্রেপ্তার করেছে এবং গ্রেপ্তারের পর আজ তাকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে হুমায়ূন কবিরকে কখন এবং কোথা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সে বিষয়ে তিনি কিছু জানাতে পারেননি।

এদিকে র‍্যাব সূত্রে জানা গেছে, নরসিংদী থেকে তিনটি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এই তিনটি অস্ত্রের কোনো একটি দিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়েছে কি না, তা ফরেনসিক পরীক্ষার পর জানা যাবে। র‍্যাব-১১ নরসিংদীতে মঙ্গলবার রাতে অভিযান চালিয়ে এসব অস্ত্র উদ্ধার করে। বর্তমানে উদ্ধার করা তিনটি অস্ত্র র‍্যাবের হেফাজতে রয়েছে।

এ বিষয়ে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক উইং কমান্ডার এম জেড এম ইন্তেখাব চৌধুরী বলেন, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র ও গোলাবারুদ নরসিংদী জেলার সদর থানাধীন তরুয়া এলাকাস্থ মোল্লার বাড়ির সামনে তরুয়ার বিলে পানির মধ্য থেকে উদ্ধার করেছে র‍্যাব। এ সময় মো. ফয়সাল (২৫) নামে আরও একজনকে আটক করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়ার অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে- ২ টি বিদেশি পিস্তল, ২ টি ম্যাগাজিন, ১টি খেলনা পিস্তল ও ৪১ রাউন্ড এমুনিশন।

শরীফ ওসমান হাদি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক এবং অভ্যুত্থান-অনুপ্রাণিত সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র। তিনি ঢাকার ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন হাদি এবং এ লক্ষ্যেই তিনি নিয়মিত গণসংযোগ চালিয়ে আসছিলেন।

গত ১২ ডিসেম্বর (শুক্রবার) জুমার নামাজের পর রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোডে মোটরসাইকেলে করে আসা দুই আততায়ীর একজন চলন্ত রিকশায় থাকা ওসমান হাদির মাথায় গুলি করে। গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে তিনি ওই হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। চিকিৎসকদের ভাষ্য অনুযায়ী, তার অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন।

হাদির ওপর হামলাকারী দুই আততায়ীর একজন সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম তার সঙ্গেই কিছুদিন ধরে নির্বাচনী প্রচার কার্যক্রমে যুক্ত ছিলেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। পুলিশের পক্ষ থেকেও তাকে সন্দেহভাজন হামলাকারী হিসেবে চিহ্নিত করে নাগরিকদের কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছে। ফয়সাল করিম নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার নেতা ছিলেন।

এমএসি/এআরবি