বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের (বিএসসি) মহাব্যবস্থাপক ক্যাপ্টেন আমীর মো. আবু সুফিয়ানের বিরুদ্ধে নাবিক নিয়োগে অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি এবং বেতন বৈষম্য, শ্রম আইন লঙ্ঘন ও নাবিকদের হয়রানিসহ নানা অভিযোগে এনে চাকরি থেকে অপসারণের দাবি জানিয়েছেন সী-ম্যান্স অ্যাসোসিয়েশন।

শনিবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ দাবি জানান অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীর। এসময় অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা জানান, দুদকসহ বিএসসির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তদন্তে নানা অনিয়মের সত্যতা মিললেও রহস্যজনকভাবে বিএসসি তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এতে নাবিক ও কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সবার মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

বক্তারা বলেন, গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর সী-ম্যান্স অ্যাসোসিয়েশন নাবিকদের হয়রানি, নিয়োগে অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি, বেতন বৈষম্য এবং শ্রম আইন পরিপন্থি কর্মকাণ্ডের অভিযোগ নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেনের কাছে দাখিল করে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ৩ অক্টোবর বিএসসি কর্তৃপক্ষ তদন্তের নির্দেশ দেয় এবং ১৬ অক্টোবর তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

তদন্ত কমিটি একাধিকবার অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে হাজির হতে ও বিগত পাঁচ বছরের ক্রু লিস্ট সরবরাহের অনুরোধ জানালেও তিনি তদন্তে সহযোগিতা করেননি। কমিটির প্রতিবেদনে তার এমন আচরণকে তদন্ত কার্যক্রমে বাধা হিসেবে উল্লেখ করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়। তবে দীর্ঘ সময় পার হলেও সেই সুপারিশ বাস্তবায়ন হয়নি।

সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, ক্যাপ্টেন আমীর মো. আবু সুফিয়ান স্থায়ী নাবিকদের বাদ দিয়ে নিজের পছন্দমতো চুক্তিভিত্তিক নাবিক ও অফিসার নিয়োগ দিয়েছেন। অতীতে বিদেশে পালিয়ে যাওয়া নাবিকদের পুনরায় নিয়োগ দেওয়ায় বিএসসির সুনাম ক্ষুণ্ণ হয়েছে। একইসঙ্গে বেতন বৈষম্য সৃষ্টি, নাবিকদের অফিসে হয়রানি, শ্রম আইন লঙ্ঘন করে চুক্তি সম্পাদন এবং স্বজনদের জাহাজে পাঠিয়ে সুবিধা নিশ্চিত করার অভিযোগও রয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অভিযোগগুলোর তদন্ত শুরু করেছে। অভিযানের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে এবং প্রাথমিকভাবে বেশকিছু অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।

সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে সী-ম্যান্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা বলেন, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পরও অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া জবাবদিহির চরম ব্যর্থতার পরিচয়। দ্রুত তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে নাবিক সমাজ আরও কঠোর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের সী-ম্যান্স অ্যাসোসিয়েশনের সহ সভাপতি সৈয়দ আমান উল্লাহ, ক্যাপ্টেন আমীর মো. আবু সুফিয়ানের স্বেচ্ছাচারিতায় দৃষ্টি হারানো আলাউদ্দিনসহ ভুক্তভোগী নাবিক ও অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা।

এমআর/এসএসএইচ