চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে যে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে তা সঠিকভাবে দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে। কোথাও ত্রুটি থাকলে চিহ্নিত করে সমাধান করা হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম।

শনিবার (২৬ জুন) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন, কর্ণফুলী নদীর নাব্যতা বৃদ্ধি, দখল ও দূষণ রোধে সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সভা শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

মন্ত্রী বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনসহ একটি সুন্দর শহর নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামে বিভিন্ন প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছেন, সেগুলো এখন বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এই বাস্তবায়ন কাজগুলো সঠিকভাবে সম্পন্ন হচ্ছে কি না তা দেখার জন্য চট্টগ্রামে এসেছি। অনেকগুলো প্রকল্প ঘুরে দেখেছি। এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন যেন সঠিকভাবে হয়।

তিনি বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন করার সময়ে কোনো ত্রুটি বিচ্যুতি চিহ্নিত হলে তা যেন সমাধান করতে পারে সেজন্য বিভাগীয় কমিশনারের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেখানে উপদেষ্টা হিসেবে থাকবেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। এই কমিটি প্রতি মাসে একটি করে সভা করবে। প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করা এবং চট্টগ্রাম শহরকে একটি দৃষ্টিনন্দন শহরে রূপান্তরিত করার জন্য তারা কাজ করবেন বলে জানান মন্ত্রী।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, কর্ণফুলী নদীর দুই পাশে শিল্পকারখানা হচ্ছে, সেখানে ইটিপি (এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট) বসানো হয়নি, ফলে কলকারখানা থেকে বর্জ্য গিয়ে নদীর পানি নষ্ট হচ্ছে। এছাড়া বর্জ্য ফেলার ফলে নদীর নাব্যতা কমে যাচ্ছে। এসব বিষয়কে  আমলে নিতে হবে। চট্টগ্রাম বন্দরের জায়গা বন্দর কর্তৃপক্ষ যে কাউকে লিজ দিতেই পারে, কিন্তু শিল্পকারখানা করার জন্য বন্দরের আশপাশে জায়গা লিজ দিয়ে কর্ণফুলী নদীর পরিবেশ ও নাব্যতা ক্ষতিগ্রস্ত করার অধিকার তো কেউ আমাদেরকে দেয়নি। কর্ণফুলী নদীর তীরের জায়গা কেন লিজ দেওয়া হবে। বিত্তবানরা কর্ণফুলী নদীর পাশে শিল্পকারখানা করতে চাইতেই পারেন। কিন্তু আমরা যারা দায়িত্বশীল আছি আমরা কি করেছি।
 
তিনি আরও বলেন, কর্ণফুলী নদীতে প্রায় ২০ ফুট গভীর পর্যন্ত পলিথিন জমা হয়েছে। এটা কেন হলো? এটা তো হওয়ার কথা ছিল না। প্রতি দশ বছর পরপর ক্যাপিটাল ড্রেজিং করার কথা, কিন্তু হয়নি। প্রতি ১০ বছরে ক্যাপিটাল ড্রেজিং করা হলে কর্ণফুলীতে এতো পলিথিন জমা হতো না। প্রযুক্তির সহয়তা নিয়ে কর্ণফুলীকে খনন করতে হবে। সমস্যার সমাধান করতে হবে।

বিভাগীয় কমিশনার মো. কামরুল হাসানের সভাপতিত্বে সভায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দিন আহমদ, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালামসহ চট্টগ্রাম সিডিএ, ওয়াসা ও সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

কেএম/জেডএস