ফ্লোর এরিয়া রেশিও বাড়লে বাসযোগ্যতার পরিবেশ-প্রতিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ
আবাসন ব্যবসায়ীদের চাপের মুখেই ঢাকা মহানগরীর বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) সংশোধন ও ইমারত বিধিমালা অনুমোদন করলো সরকার। এর ফলে রাজধানীর বেশিরভাগ এলাকায় ভবন নির্মাণে ফ্লোর এরিয়া রেশিও (এফএআর), জনঘনত্ব ও আবাসন ইউনিটের মান বহুলাংশে বেড়েছে। এটা অপরিণামদর্শী ও ঢাকা মহানগরীর বাসযোগ্যতাসহ নির্মিত পরিবেশ ও প্রতিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ।
শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) বাংলামোটরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স আয়োজিত ‘ঢাকা মহানগরীর বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) এর সংশোধন এবং ইমারত বিধিমালা অনুমোদন : ঢাকার ক্রমবর্ধমান বাসযোগ্যতার সংকট’ শীর্ষক সেমিনারে পরিকল্পনাবিদরা এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
ব্যবসায়িক স্বার্থগোষ্ঠীর অনৈতিক চাহিদা পূরণ করতে ঢাকার বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনার (ড্যাপ) সংশোধন ও অনুমোদনকৃত ইমারত নির্মাণ বিধিমালার ত্রুটিপূর্ণ গেজেট অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, মাটির জিওলজিক্যাল এবং হাইড্রোলজিক্যাল বৈশিষ্ট্য, সিসমিক মাইক্রো জোনিং, লিকুইফেকশন প্রভৃতি বিবেচনায় নিয়ে দুর্যোগ সহনশীল ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনার মাধ্যমে এলাকাভিত্তিক ভবনের উচ্চতা, এফএআর, জনঘনত্ব নির্ধারণ করতে হবে। শহরের বাসযোগ্যতা ও অবকাঠামো, নাগরিক সুবিধাদি ও পরিবেশের ধারণক্ষমতা বিবেচনায় নিয়েই সব পরিকল্পনা প্রণয়নের দাবি জানাই।
বিআইপি উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য পরিকল্পনাবিদ-স্থপতি সালমা এ. শফি বলেন, ঢাকার আশপাশের জেলা ও উপজেলা কীভাবে পরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন করা হবে, সে বিষয়েও ড্যাপে বলা রয়েছে। পাশাপাশি গ্রামীণ ও প্রান্তিক এলাকাগুলোর পরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন করা গেলে মানুষের ঢাকামুখী প্রবণতা কমানো যাবে।
বিজ্ঞাপন
পরিকল্পনাবিদ সৈয়দ শাহরিয়ার আমিন বলেন, ড্যাপের সংশোধনের প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ। স্বার্থের দ্বন্দ্ব রয়েছে এমন গোষ্ঠী ও অংশীজনকে সম্পৃক্ত করে যে পরিমার্জন করা হয়েছে, তা ভবিষ্যতে আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে কি না, সে বিষয়ে কোনো নিশ্চয়তা নেই।
বিআইপি ফেলো পরিকল্পনাবিদ এ কে এম রিয়াজ উদ্দিন বলেন, রাষ্ট্রকে স্পষ্টভাবে জানাতে হবে আমরা আদৌ পরিকল্পিত উন্নয়ন চাই কি না। কারিগরি জ্ঞান ও প্রমাণভিত্তিক তথ্য ছাড়া কোনো উদ্যোগ গ্রহণ থেকে আমাদের বিরত থাকতে হবে। ঢাকায় আমরা সর্বোচ্চ কত মানুষকে রাখতে চাই, সে সিদ্ধান্ত আগে রাষ্ট্রকেই নিতে হবে।
বিআইপির বোর্ড সদস্য পরিকল্পনাবিদ আবু নাইম সোহাগ বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্য যে আজ ড্যাপ এবং ফার দুটি একে অপরের সমার্থক শব্দ হয়ে গেছে। ড্যাপ কয়েক বছর পর পর পরিবর্তনযোগ্য। কিন্তু বিগত তিন বছরে দুইবার ড্যাপের পরিবর্তন করা হলো ঠিক কোন প্রক্রিয়ায় সেটা প্রশ্নবিদ্ধ।
বিআইপির সহ সভাপতি-১ পরিকল্পনাবিদ শাহরিয়ার আমিনের সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইপির সভাপতি পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান।
এএসএস/এসএসএইচ