দীর্ঘ সাড়ে তিন বছর পর আবারও আগের রুটে ফিরেছে চট্টগ্রাম-ইব্রাহিমাবাদ (সেতু পূর্ব) রুটের জনপ্রিয় যাত্রীবাহী ট্রেন নাসিরাবাদ এক্সপ্রেস (৩৭/৩৮)। রোববার (২৮ ডিসেম্বর) থেকে ট্রেনটি পুনরায় ইব্রাহিমাবাদ স্টেশন পর্যন্ত চলাচল শুরু করেছে।

নাসিরাবাদ এক্সপ্রেস প্রথম চালু হয় ১৯৮৬ সালের ২৪ মার্চ। সেসময় ট্রেনটি চট্টগ্রাম থেকে সরিষাবাড়ীর জগন্নাথগঞ্জ ঘাট পর্যন্ত চলাচল করত। তবে ২০০৪ সালে জগন্নাথগঞ্জ ঘাট বন্ধ হয়ে গেলে ট্রেনটির গন্তব্য পরিবর্তন করে তারাকান্দি পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়।

পরে ২০১২ সালে জামালপুর-ইব্রাহিমাবাদ রেললাইন চালু হলে নাসিরাবাদ এক্সপ্রেসের রুট আরও সম্প্রসারিত হয় এবং ট্রেনটির গন্তব্য ইব্রাহিমাবাদ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।

এরপর ২০২০ সালে ট্রেনটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হলেও পরে আবার চালু করা হয়। সর্বশেষ ২০২২ সালের ২৩ জুন নাসিরাবাদ এক্সপ্রেস চট্টগ্রাম থেকে ভূঞাপুর পর্যন্ত সীমিত পরিসরে চলাচল শুরু করে। তবে ওই সময় থেকে ট্রেনটি আর ইব্রাহিমাবাদ (সেতু পূর্ব) পর্যন্ত যেতে পারেনি।

এদিকে, চলতি বছরের শুরুতে যমুনা রেলসেতু চালু হলেও ইব্রাহিমাবাদ-ভূঞাপুর অংশে রেললাইন ও সিগন্যালের কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় ট্রেন চালু করা সম্ভব হয়নি। অবশেষে সংশ্লিষ্ট রেললাইন ও সিগন্যালের কাজ শেষ হওয়ায় রোববার সেই দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটল।

রোববার (২৮ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ রেলওয়ের রাজশাহী (পশ্চিম) অঞ্চলের সহকারী চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট মো. আব্দুল আওয়াল স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে জানানো হয়, ইব্রাহিমাবাদ-ভূঞাপুর সেকশনে ট্রেন পরিচালনার উপযোগিতা যাচাই শেষে ২৮ ডিসেম্বর থেকে ট্রেন পরিচালনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে রোববার চট্টগ্রাম থেকে ইব্রাহিমাবাদ (সেতু পূর্ব) পর্যন্ত নাসিরাবাদ এক্সপ্রেস ট্রেনটি পুনরায় চলাচল শুরু করে।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম থেকে ইব্রাহিমাবাদ পর্যন্ত সরাসরি চলাচলকারী একমাত্র ট্রেন নাসিরাবাদ এক্সপ্রেস। দীর্ঘ এই রুটে ট্রেনটি বিভিন্ন স্টেশনের যাত্রীদের যাতায়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে। ট্রেনটি আগের রুটে ফিরে আসায় সংশ্লিষ্ট এলাকার যাত্রীরা স্বস্তি ও সন্তোষ প্রকাশ করেছে।

নাসিরাবাদ এক্সপ্রেস চট্টগ্রামের চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে টাঙ্গাইলের যমুনা সেতু পূর্ব স্টেশন পর্যন্ত চলাচল করে। ট্রেনটি টাঙ্গাইল, জামালপুর, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা ও ফেনী জেলা হয়ে চলাচল করে। এটি বাংলাদেশ রেলওয়ের সবচেয়ে দীর্ঘ রুটে চলাচলকারী লোকাল ট্রেন। ট্রেনটির মোট ভ্রমণ দূরত্ব ৪৭০ কিলোমিটার।

এমএইচএন/এসএসএইচ