প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

আগামী জুলাই মাস থেকে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার (২৯ জুন) জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ আশা প্রকাশ করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা আশা করছি জুলাই মাস থেকে আরও ভ্যাকসিন আসবে। আমরা ব্যাপক হারে ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু করতে পারব।

তিনি বলেন, আমরা ৮০ শতাংশ মানুষকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনব। বিশেষ করে বিদেশে যারা যাবেন, আগে তাদের ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য আমরা বলেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, চীন, রাশিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী দেশ ও প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দেশের সব নাগরিককে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেবো বলে ঘোষণা করেছি। এজন্য ভ্যাকসিন সংগ্রহরে জন্য যত টাকাই লাগুক না কেন, আমরা দেব। ভারত ভ্যাকসিন রফতানি বন্ধ করে দেওয়ায় আমরা সাময়িকভাবে সমস্যায় পড়েছি। কিন্তু আল্লাহর রহমতে বর্তমানে আমাদের ব্যবস্থা হয়ে গেছে। এখন আর কোনো সমস্যা হবে না।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্য খাতকে সর্বাপেক্ষা অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। গত বছর আমরা করোনার প্রথম ঢেউ সফলভাবে মোকাবিলা করেছি। সেই অভিজ্ঞতায় দ্বিতীয় ঢেউয়ে আমরা দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। মহামারি মোকাবিলা করে জনস্বাস্থ্য ও জনজীবন সুরক্ষা করতে আমরা সক্ষম হবো ইনশাহ আল্লাহ।

শেখ হাসিনা বলেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এখনও বিদ্যমান থাকায় যেকোনো জরুরি চাহিদা মোকাবিলায় আমরা এই বাজেটে ১০ হাজার কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দ রেখেছি। দ্রুততম সময় স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ১০ হাজার চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সংগ্রহ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। ভবিষ্যতে স্বাস্থ্যখাতে অভিঘাত থেকে মুক্তি পেতে সমন্বিত বিজ্ঞান গবেষণা ও উন্নয়ন তহবিল গঠন করা হয়েছে। বাজেটে এ খাতে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।

তিনি বলেন, যখন ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা চলছিল পৃথিবীর সব জায়গায় আমরা যোগাযোগ করি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদন দেয়ার আগেই আমরা টাকা পাঠিয়ে ভ্যাকসিন বুক করেছি। দুর্ভাগ্যজনক ভারতে হঠাৎ করোনা এতো ব্যাপকহারে বেড়ে গেল যে তারা ভ্যাকসিন রফতানি বন্ধ করে দেয়। এতে আমরা সাময়িকভাবে সমস্যায় পড়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু আল্লাহর রহমতে বর্তমানে আমাদের ব্যবস্থা হয়ে গেছে।

সরকার প্রধান বলেন, ভ্যাকসিন কেনার জন্য বাজেটে আমরা ১৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছি। বিভিন্ন উৎস থেকে ইতোমধ্যে এক কোটি ১৪ লাখ ৬ হাজার ডোজ ভ্যাকসিন সংগ্রহ করেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। করোনাভাইরাসে সারা বিশ্ব ক্ষতিগ্রস্ত। এমন সময় আমরা বাজেট দিয়েছি। একদিকে সারা বিশ্ব করোনায় আক্রান্ত অপরদিকে আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়। আমরা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করছি। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করছি। একই সময় বাংলাদেশকে আমরা উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করতে পেরেছি। এই তিনটি গৌরবময় অধ্যায়ের মাঝে করোনায় জর্জরিত।

তিনি বলেন, মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাব থাকা সত্ত্বেও সরকারের পদক্ষেপে আমাদের অর্থনীতি পুর্ণাঙ্গভাবে পুনরুদ্ধারের পথে রয়েছে। সরকার সংকটকালে দেশের মানুষের পাশে আছে, থাকবে। মানুষের পাশে আমরা দাঁড়াবো।

এইউএ/এমএইচএস