করোনাকালে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ যাত্রা বন্ধ থাকার কারণে আড়াই হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হওয়াকে ‘করোনার আর্শিবাদ’ বলে অভিহিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। তিনি  করোনা থেকে শিক্ষা নিয়ে আমলাদের অপ্রয়োজনীয় বিদেশ সফর নিয়ন্ত্রণ করতে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।

শনিবার (৩ জুলাই) রাতে এক ফেসবুক লাইভে ব্যারিস্টার সুমন এ আহ্বান জানান।

ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ডেইলি স্টারে একটা নিউজ দেখলাম সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ যাত্রা বন্ধ থাকার কারণে আড়াই হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে বাংলাদেশের। চিন্তা করতে পারেন, আড়াই হাজার কোটি টাকা সাশ্রয়! করোনার কারণে এটা সম্ভব হয়েছে। করোনার কারণে গত বছর থেকে সরকারি কর্মকর্তারা বিদেশ সফর করতে পারছেন না। আর এ করোনায় তাদের বিদেশ যাওয়ার প্রতি আগ্রহও নাই। কারণ কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হয়। এ কারণে আড়াই হাজার কোটি টাকা সেইভ হলো। এই আড়াই হাজার কোটি টাকা থেকে আমাকে যদি দেড় হাজার কোটি টাকা দেন, তাহলে আমার এই হবিগঞ্জ জেলার বেশির ভাগ সমস্যার সমাধান করে দিতে পারতাম। পুরো মডেল একটি জেলা হিসেবে তৈরি করতে পারতাম দেড় হাজার কোটি পেলে। অনেকেই বলে, করোনা আর্শিবাদ নয়, করোনা অভিশাপ। কিন্তু আমি বলবো করোনা অভিশাপের সঙ্গে সঙ্গে কিছু কিছু জায়গায় করোনা আর্শিবাদ। 

'দেখেন করোনা আসার কারণে যে দেশের আড়াই হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে, এটা আমরা জীবনেও বুঝতে পারতাম না। করোনার কারণে রাস্তায় এক্সিডেন্ট কমে গেছে। বনের মধ্যে গাছ বাড়ছে। করোনার কারণে সাগরের ডলফিন তীরে আসছে। একজন মন্ত্রী আমলাতন্ত্রের কথা বলেছেন। এই আমলাতন্ত্র নাকি ফেরাউনের আমলেও ছিল। ফেরাউনও নাকি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে নাই। আমলাদের বিদেশ যাওয়ার বিষয়ে বলতে চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিদেশ যাত্রা সীমিত করার জন্য বার বার বলেছেন। আমলাদের সঙ্গে কে পেরে উঠবে বলেন? আড়াই হাজার কোটি টাকা! আমি তো শুনে অবাক। আমার কাছে মনে হয়েছে এইটা বাংলাদেশ। 

এই বাংলাদেশে আড়াই হাজার কোটি টাকা যায় শুধু আমলাদের বিদেশ সফরের জন্য? কিছু ক্ষেত্রে প্রয়োজন ছাড়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমলারা বিলাসিতার জন্য বিদেশ সফর যান। বিলাসিতা ছাড়া বিদেশ থেকে তারা কোন কিছুই আনতে পারেন না। বিদেশ ভ্রমণ না করলে তো তাদের স্ট্যাটাসই বাড়ে না। এ কারণে তারা বিদেশ যান। একটি জিনিস আমি সরকারকে বলতে চাই, করোনা থেকে তো অনেক কিছু শিক্ষা পেলেন। শুধু যে করোনার কারণে বিদেশ সফরের আড়াই হাজার কোটি টাকা সেইভ হয়েছে তা নয়। করোনার কারণে সিজারের সংখ্যা অনেকটুকু কমে গেছে। এর মানে সিজার বলেন, বিদেশ যাত্রা বলন,বেশির ভাগ জিনিসই অপ্রয়োজনীয়। এগুলো যে অপ্রয়োজনীয় করোনা না হলে তা প্রতিষ্ঠা করতে পারতাম না। দেখেন বার বারই বলি প্রকৃতি কখন প্রতিশোধ নেয়, যখন মানুষ নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়। তাই সরকারের প্রতি আহবান, করোনা থেকে শিক্ষা নিয়ে অপ্রয়োজনীয় বিদেশ সফরকে নিয়ন্ত্রণ করুন। তাহলে প্রতি বছর অন্তত এক হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করা সম্ভব হবে।

এমএইচডি/এসএম