নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ফুডস ফ্যাক্টরিতে (সেজান জুসের কারখানা) লাগা আগুনে অন্তত ৫২ জন নিহত হয়েছেন। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পার হলেও এখনও আগুন নেভেনি।

শুক্রবার (০৯ জুলাই) ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের মহাপরিদর্শক মো. নাসির উদ্দিন আহমেদ। পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিস থেকে আমাদের জানিয়েছে ভবনটির ছাদে ওঠার আগে সিঁড়ি নেট দিয়ে বন্ধ ছিল। নেট থাকায় ছাদে উঠতে পারেননি শ্রমিকরা। যে কারণে আগুনে মৃত্যু বেড়েছে।

পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল কি না, কারখানা পরিচালনার জন্য যা যা করণীয় তা অনুসরণ করা হয়েছিল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের কোনো গাফিলতি নেই। তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে কি কারণে আগুনের ঘটনা ঘটেছে। তবে প্রাথমিকভাবে ফায়ার সার্ভিস আমাদের এমনটিই জানিয়েছে।
 
নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, এখানে নথিপত্র ঠিক আছে কি না সেটি খতিয়ে দেখা হবে। এখানে আমিসহ আমার দফতরের অনেক কর্মকর্তাই আছেন। পুরো ঘটনা আমরা তদন্ত করে দেখব। জেলা প্রশাসন থেকে ৯ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস থেকে পাঁচ সদস্যের কমিটি হয়েছে। আমাদের দফতর থেকেই তদন্ত করা হবে।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের নারায়ণগঞ্জ জেলার প্রধান উপ-মহাপরিদর্শক সৌমেন বড়ুয়া বলেন, আমাদের দফতর থেকে সেফটি বিষয়টি তদন্ত করছি। ডিআইজি সেফটিকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের কমিটি হয়েছে। কমিটি ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে।

বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টার পর ওই কারখানায় আগুন লাগে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তিনজনের মৃত্যুর খবর আসে। 

গতকাল প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছিলেন, হাশেম ফুডস লিমিটেডের ৭ তলা ভবনের নিচ তলার একটি ফ্লোরে হঠাৎ করে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। সময়ের সাথে সাথে আগুনের লেলিহান শিখা বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে আগুন পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। কালো ধোঁয়ায় গোটা কারখানাটি অন্ধকার হয়ে যায়। শ্রমিকরা ছোটাছুটি করতে শুরু করেন। কেউ কেউ ভবনের ছাদে অবস্থান নেন। এ সময় ঘটনাস্থলেই স্বপ্না রানী ও মিনা আক্তার নামে দুই নারী শ্রমিক নিহত হন। 

রাত ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মোরসালিন (২৮) নামে আরও একজনের মৃত্যু হয়।

জেইউ/জেডএস