নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ফ্যাক্টরির ৫ ও ৬ তলায় চলছে উদ্ধার অভিযান। উদ্ধার অভিযান ফায়ার সার্ভিসের টিম প্রতিটি ফ্লোরে খুঁজে দেখছেন আর কোনো মরদেহ আছে কি না।

এদিকে বিল্ডিংয়ের ওপরে উদ্ধার অভিযান চললেও নিচ তলায় এখনও আগুন দেখা গেছে। আগুন জ্বলার পাশাপাশি ভবনের প্রতিটি ফ্যাট থেকে কালো ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়।

শুক্রবার (৯ জুলাই) বিকেলে সাড়ে ৪ টায় ঘটনাস্থলে এ চিত্র দেখা যায়।

ঘটনাস্থলে সরেজমিনে দেখা যায়, কারখানার প্রধান ফটকের র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব), পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা ঘিরে রেখেছে। ভেতরে আইন-শৃঙ্খলা সংশ্লিষ্ট ও গণমাধ্যম কর্মী ছাড়া কাউকেই প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

প্রধান ফটকের ভেতরে প্রবেশ করতেই বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ও প্লাস্টিকের চেয়ার ভাঙাচোরা অবস্থায় দেখা যায়। এছাড়া রাস্তায় প্রচুর পরিমাণে ইট-পাটকেল ও কাচের টুকরা দেখা যায়।

এদিকে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুপুরের দিকে মরদেহ বের করে নেওয়ার সময় উত্তেজিত জনতা ভাঙচুর করেছে। তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেলও নিক্ষেপ করে।

এদিকে যে ভবনে আগুন লেগেছে সেটিতে গিয়ে সরেজমিনে দেখা যায়, বিল্ডিংয়ের নিচতলায় এখনও আগুন এবং ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করছে।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা চারতলা পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান শেষ করেছেন। উদ্ধার হওয়া মরদেহগুলো ১ থেকে ৪তলার মধ্যে পাওয়া গিয়েছে। এখন পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলায় ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার অভিযান চলছে।

এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের উপ পরিচালক (অপারেশন্স) দেবাশীষ বর্ধন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ৫ম তলা পর্যন্ত আমাদের উদ্ধার কাজ শেষ হয়েছে। এখন উদ্ধারকাজ ষষ্ঠ তলায় চলছে। পাঁচতলা থেকে কোনো মরদেহ পাওয়া যায়নি বলে আমাদের টিম জানিয়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে না আসবে ততক্ষণ আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। ঘটনাস্থলে এখনও আমাদের ১৮টি টিম কাজ করছে।

তিনি বলেন, ভবনটিতে অপর্যাপ্ত সিঁড়ি ছিল, সেজন্য শ্রমিকরা দ্রুত নামতে পারেনি।

বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টার পর রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ফুডস ফ্যাক্টরিতে (সেজান জুসের কারখানা) আগুন লাগে। এ ঘটনায় আজ (শুক্রবার) বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত অন্তত ৫২ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক দেবাশীষ বর্ধন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত  কারখানার ভেতর থেকে ৪৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এসব লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে। সেখানে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মারা যান ৩ জন।
 
প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, নিহতদের মধ্যে অনেক শিশু শ্রমিক আছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাদের পরিচয় শনাক্ত করা হবে। 

এমএসি/এএসএস/পিএসডি/জেইউ/এসএম