নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ফুডস ফ্যাক্টরিতে একসঙ্গে কাজ করতেন মা মিনা খাতুন ও মেয়ে চম্পা খাতুন। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় চম্পা প্রাণে বেঁচে গেলেও খুঁজে পাননি তার মাকে।

শুক্রবার (৯ জুলাই) বিকেলে রূপগঞ্জ থেকে বাবাকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে মায়ের মরদেহ শনাক্ত করতে আসেন চম্পা।

তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আমি কাজ করতাম তৃতীয় তলায়। মা কাজ করতেন চতুর্থ তলায়। অগ্নিকাণ্ডের আগে আমি নিচে নামায় প্রাণে বেঁচে যাই। কিন্তু মাকে খুঁজে পাচ্ছি না।’

কান্নাজড়িত কণ্ঠে চম্পা বলেন, আইডি কার্ড নিতে আমি নিচ তলায় নামি। পরে আগুনের খবর শুনে আর উপরে উঠিনি। এরপর দীর্ঘক্ষণ মায়ের জন্য অপেক্ষা করেছি। কিন্তু মা আর ফিরে আসেনি।

নিখোঁজ মিনা খাতুনের মেয়ে বলেন, রাত ৮টায় কারখানার কাজ শেষে মায়ের সঙ্গে বাসায় ফেরার কথা ছিল। কিন্তু মাকে পাইনি, মা এখনও ফিরল না। মাকে খুঁজে পাচ্ছি না। পরে শুনলাম ঢাকা মেডিকেলে অনেকের লাশ এসেছে। এখানেও মায়ের দেখা পাইনি। আমার মা কোথায় আছে, কেমন আছে, আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেন না।

চম্পারা চার ভাই, দুই বোন। তাদের পরিবারের সবাই নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন ফ্যাক্টরিতে কাজ করেন।

হাসেম ফুডস লিমিটেডের সাত তলা ভবনের নিচ তলার একটি ফ্লোরে বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টার পর আগুনের সূত্রপাত হয়। দ্রুতই আগুনের লেলিহান শিখা বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে আগুন পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। কালো ধোঁয়ায় গোটা কারখানাটি অন্ধকার হয়ে যায়। শ্রমিকরা ছোটাছুটি করতে শুরু করেন। কেউ কেউ ভবনের ছাদে অবস্থান নেন। এ সময় ঘটনাস্থলেই স্বপ্না রানী ও মিনা আক্তার নামের দুই নারী শ্রমিক নিহত হন।

রাত ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মোরসালিন (২৮) নামে আরও একজনের মৃত্যু হয়।

প্রাণে বাঁচতে ভবন থেকে লাফিয়ে পড়েন অনেকে। লাফিয়ে পড়ে আহত হওয়া অন্তত ছয়জনকে গতকাল ঢামেকে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার দুপুরে ওই কারখানার ভেতর থেকে ৪৯ জনের লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

এআর/এসআই/এসএএ/এমএইচএস