ব্রিটিশ ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার জাভেদ প্যাটেল

ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার জাভেদ প্যাটেলকে তলব করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। যুক্তরাজ্যের বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদনে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে ‘গৃহবন্দি’ শব্দটি ব্যবহার করা এবং বাংলাদেশ অধ্যায়ে উল্লেখিত কিছু বিষয় নিয়ে সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি ও হতাশার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে তলব করা হয়। 

আজ রোববার (১১ জুলাই) ব্রিটিশ ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে তলব করার বিষয়টি এক বিবৃতিতে জানায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। 

বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে ‘গৃহবন্দি শব্দটি ব্যবহার করা চরম বিভ্রান্তিকর। ব্রিটিশ ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে স্পষ্ট করে জানানো হয়েছে, বেগম জিয়ার ভাইয়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে খালেদা জিয়ার কারাগারের সাজা স্থগিত করেছে সরকার। ফৌজদারি কার্যবিধির বিধান ১৮৯৮ অনুযায়ী এ সাজা স্থগিত করা হয়। বিদেশ ভ্রমণ করবে না এবং বাড়িতে চিকিৎসা নেবেন এমন শর্তে ২০২০ সালের মার্চ মাসে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। সে সময় ছয় মাসের জন্য তার সাজা স্থগিত করে তাকে জেল থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। পরে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর এবং ২০২১ সালের মার্চ মাসে দুবার মেয়াদ বাড়ানো হয়।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে বলা হয়েছে যে, এ ধরনের আইনি সমস্যা নিয়ে কোনো বিভ্রান্তির ক্ষেত্রে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পরামর্শ করা বাঞ্ছনীয়। 

বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) প্রকাশিত যুক্তরাজ্যের বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের মার্চ মাসে সরকার খালেদা জিয়ার কারাদণ্ডাদেশ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে। তখন বিদেশে না যাওয়া এবং চিকিৎসা বাসায় নেওয়ার শর্তে তাকে কারামুক্তি দেয়। গত সেপ্টেম্বর মাসে তার কারাদণ্ডাদেশ স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানো হয়। ২০২০ সালজুড়ে তিনি ‘হাউস অ্যারেস্ট (গৃহবন্দি)’ ছিলেন। 

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, যুক্তরাজ্যের বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদনে বাংলাদেশে সাময়িকভাবে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের যে সংখ্যা ব্যবহার করা হয়েছে তা বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগের। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এ বিষয়ে সরকারের অবস্থানের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার বিষয়গুলো নোট করেছেন। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস কর্তৃপক্ষকে বিষয়গুলো জানাবেন।  

বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার মানবাধিকার ও প্রশাসনিক ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের গঠনমূলক সংলাপ চালিয়ে যাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তিনি বাংলাদেশকে ‘পরিপক্ব গণতন্ত্র’ হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে বলেন, যুক্তরাজ্য সরকার বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান নেয়নি।

এনআই/এইচকে