বিধিনিষেধে ঘরফেরা মানুষে জমজমাট আমিনবাজার
করোনাভাইরাসের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিস্তার ঠেকাতে দেশজুড়ে চলছে কঠোর বিধিনিষেধ। এ সময়ে মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণে বন্ধ রাখা হয়েছে দূরপাল্লার বাস। কিন্তু এরপরও সবকিছু উপেক্ষা করেই ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে ঢাকা ছাড়ছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। ভিড় করছেন ঢাকার বিভিন্ন প্রবেশ মুখে।
সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধে সড়ক একেবারেই ফাঁকা থাকার কথা। কিন্তু সোমবার (১২ জুলাই) আমিন বাজার ব্রিজ পার হয়ে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। হাজার হাজার মানুষ গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছেন। সেখানে সহজেই মিলছে প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেল।
বিজ্ঞাপন
পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে কুষ্টিয়া যাবেন হাসেম। আমিনবাজার এসে তিনি গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছেন। হাসেম জানান, পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে আগেভাগেই বাড়ি চলে যাচ্ছি। কিন্তু সরকারের কড়াকড়িতে ভোগান্তি হচ্ছে। আমিনবাজার থেকে সহজেই ঘাট পর্যন্ত যাওয়া যাচ্ছে। ঘাটে গিয়ে ছোট লঞ্চ, ট্রলারে নদী পাড়ি দেব। নদী পার হতে পারলেই আর কোনো চিন্তা নেই।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নিষেধাজ্ঞা থাকলেও প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেলে চেপেই যাত্রীরা যাচ্ছেন আরিচা-পাটুরিয়া ঘাটের দিকে। এজন্য প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসে যাত্রীদের ভাড়া গুনতে হচ্ছে জনপ্রতি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। মোটরসাইকেলে জনপ্রতি নেওয়া হচ্ছে ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা। তবে প্রশাসনের তৎপরতায় যাত্রীদের গাবতলী থেকে হেঁটে আমিনবাজার গিয়েই ঘাটে যাওয়ার গাড়ি ধরতে হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
মিন্টু যাবেন পাবনা। বোনকে নিয়ে রওনা হয়েছেন অনিশ্চিত যাত্রায়। লঞ্চ ও ট্রলার চলছে কি না তাও জানেন না। তিনি বলেন, বাড়িতে যাচ্ছি অসুস্থ মায়ের জন্য। মা অসুস্থ না থাকলে এই পরিস্থিতিতে বাড়িতে যেতাম না। মূলত মাকে দেখতেই বাড়ি যাচ্ছি।
মো. রফিক নামে সাটুরিয়াগামী এক যাত্রী বলেন, গাড়ি চলাচল না করায় বিপদে পড়েছি। ফার্মগেট থেকে মোটরসাইকেলে গাবতলী এসেছি। গাবতলী থেকে আমিনবাজার পায়ে হেঁটে এসেছি। এখান থেকে লেগুনা করে যাব।
এ বিষয়ে গাবতলী ট্রাফিক সিগন্যালের দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা মো. মাহবুব ঢাকা পোস্টকে বলেন, গাবতলী থেকে আমরা কাউকে ছাড়ছি না। একেবারে জরুরি কাজ ছাড়া এবং মানবিক বিষয় ছাড়া কাউকে গাবতলীর বাইরে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। তবে কেউ পায়ে হেঁটে যেতে চাইলে তো আর না করতে পারছি না।
করোনার ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিস্তার ঠেকাতে গত ২৪ জুন জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি এক বিজ্ঞপ্তিতে সারাদেশে ১৪ দিনের ‘শাটডাউনে’র সুপারিশ করে। এর আলোকে ২৮ জুন থেকে ৩০ জুন তিন দিন সীমিত পরিসরে বিধিনিষেধ ঘোষণা করে সরকার। এরপর ১ জুলাই থেকে দেশব্যাপী শুরু হয় কঠোর বিধিনিষেধ। এটি ছিল ৭ দিন। পরে এটি আরও ৭ দিন বাড়িয়ে ১৪ জুলাই পর্যন্ত করা হয়।
এসআর/এমএইচএস/জেএস