নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের দায় আমলাদের বলে মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়ের ফ্যাক্টরি পরিদর্শক বিভাগ কী করেছে? তাদের তো উচিত ছিল ওই ফ্যাক্টরিতে সকল নিয়ম মানা হয়েছে কি না, তাদের লাইসেন্স আছে কি না এবং ফায়ার এক্সিট আছে কি না, ফ্যাক্টরি চালানোর অনুমোদন আছে কি না তা দেখা।  

মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে অবস্থিতি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে শ্রমিক নিহত এবং সামগ্রিক করোনা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে এ ‘নাগরিক সংবাদ সম্মেলন’ অনুষ্ঠিত হয়।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, সব থেকে মজার ব্যাপার হলো এই অগ্নিকাণ্ড যাদের অবহেলায় হয়েছে এবং যারা এসব হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে পরোক্ষভাবে দায়ী তাদেরই জয়েন সেক্রেটারিকে এই ঘটনার তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে। এই তদন্ত কিমিটির থেকে আমরা কী আশা করতে পারি? 

তিনি বলেন, গণতন্ত্রের প্রতি যদি সরকারের ন্যূনতম আস্থা থাকতে তাহলে একজন সংসদ সদস্য, রাজনীতিবিদ, বিরোধীদলীয় রাজনীতিবিদ কিংবা সাংবাদিক অথবা বুদ্ধিজীবীদের সমন্বয়ে এই তদন্ত কমিটি গঠন করত। যারা নিরপেক্ষ ভাবে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিতেন।

সংবাদ সম্মেলনে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, একটা বড় ট্রাজেডি ঘটার আগে কেউ দেখে না। যখন খবর এসে যায় তখন আমাদের সরকার বলে ওমুকের দোষ, তমুকের দোষ। একজন আরেকজনকে দুষছেন। 

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের অগ্নিকাণ্ডে কতজন মানুষের প্রাণহানি হয়েছে তা যথাযথভাবে প্রকাশ করার দাবি জানান গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, বলা হচ্ছে ৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ডিএনএ ও অন্যান্য আলামত দেখে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়ছে। স্থানীয়দের দাবি সেখানে আরও অনেক বেশি শ্রমিক মারা গেছেন। 

তিনি বলেন, প্রত্যেক মৃত শ্রমিকের পরিবারকে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। পাশাপাশি ক্ষতিপূরণের একটা মানদণ্ড তৈরির দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ক্ষতিপূরণের যে মানদণ্ড আছে তা পরিবর্তন হওয়া দরকার। ক্ষতিপূরণ নির্ধারিত হবে কোনো শ্রমিক যদি কর্মক্ষেত্রে মারা যান তাহলে তার এক জীবনের আয়ের সমান। মৃত্যুকালীন বয়স থেকে স্বাভাবিক নিয়মে অবসরে সময়কাল পর্যন্ত শ্রমিকের সম্ভব্য যে আয় সেই পরিমাণ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, এই সরকার পরিকল্পিতভাবে নাগরিকদের মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। করোনাকালে যাদের প্রাণ চলে গেছে, এটাকে গণহত্যার সঙ্গে তুলনা করা যায়। যার জন্য সরকার দায়ী থাকবে। অন্যান্য সময়ের চেয়ে করোনাকালে রাজনৈতিক দমন-পীড়ন বেড়েছে। সম্প্রতি আমরা লক্ষ্য করছি যে, মাদরাসা ও ইসলামি মাইন্ডের মানুষদের বেশি গুম করা হচ্ছে। এটার কারণ আমরা বলতে পারছি না। প্রত্যেকটি গুম-খুনের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় বাহিনী জড়িত। যদি বাহিনী জড়িত না থাকে তাহলে তারা খুঁজে বের করুক এই গুম কারা করেছে? তাদের তো এটা দায়িত্ব।

এএইচআর/এইচকে