দেশে প্রচলিত ও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে কারাখানায় শিশুশ্রমিক নিয়োগ, নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত না করায় নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সেজান কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে শিশুসহ ৫২ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এর দায় কারখানা কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে কলকারখানা পরিদর্শন অধিদফতর, সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও মন্ত্রণালয় কোনোভাবেই এড়াতে পারে না।

যাদের অবহেলা, উদাসীনতায় কোমলমতি শিশুসহ ৫২ শ্রমিকের প্রাণ গেছে তদন্ত শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে জাতীয় শিশু কিশোর সংগঠন কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসর।

শুক্রবার (১৬ জুলাই) রাজধানীর শাহবাগে সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে এ দাবি জানানো হয়।

এ সময় বক্তারা বলেন, দেশের সব কারখানায় শিশুশ্রমিক চিহ্নিত করতে খেলাঘরের প্রতিনিধি রেখে সরকারি পর্যায়ে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করতে হবে। আইন অমান্য করে যেসব কারখানায় শিশুশ্রমিক পাওয়া যাবে গঠিত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে সেসব কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। 

বক্তারা বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে গ্রামাঞ্চলের শিশুরা সংসারের অভাব মেটাতে অল্প বয়সে কর্মক্ষেত্রে নিজেদের যুক্ত করছে। এই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে বিভিন্ন কারখানা কর্তৃপক্ষ। তারা অল্প বেতনে ঝুঁকিপূর্ণ পেশায় শিশুশ্রমিক নিয়োগ দিয়ে বেশি কাজ করাচ্ছে। অথচ আইন অনুযায়ী ১৮ বছরের নীচে সবাই শিশু। তাদের শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।

ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন (আইএলও) কনভেনশন, জাতিসংঘ শিশু অধিকার সদন অনুযায়ী কর্মক্ষেত্রে শিশুদের বয়স নির্ধারণ করা আছে। কিন্তু দেশের বাস্তবতা হলো কেউ আইন মানে না। সরকারের পক্ষ থেকে কারখানাগুলোতে শিশুশ্রমিক নিয়োগ ঠেকাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও চোখে পড়ে না। এমন বাস্তবতায় শিশুদের আলোকিত ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে যেকোনো মূল্যে কারখানাগুলোয় শিশুশ্রমিক নিয়োগ বন্ধ করতে হবে।

মানববন্ধনে খেলাঘরের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামাল চৌধুরীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, আবদুল মতিন ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক প্রণয় সাহা, শফিকুর রহমান শহীদ, হান্নান চৌধুরী, সাংবাদিক রাজন ভট্টাচার্য,নসরু কামাল খান, আশরাফিয়া আলী আহমেদ নান্তু, শামীম আহমেদ, সুজন মজুমদার, জিতু জলিল প্রমুখ।

পিএসডি/এইউএ/এসকেডি