দিন যতই যাচ্ছে অনলাইন বাজার ততই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।  গত কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশে কোরবানি ঈদের সময় অনলাইনে পশু কেনাকাটা হচ্ছে। তবে এবার করোনাকালের ঈদে তা পেয়েছে ভিন্ন মাত্রা। 

প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের কোরবানিযোগ্য পশু বিক্রয় কার্যক্রম অগ্রগতির সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা যায় দেখা যায়, রোববার  ২৮ হাজার ৬৮৮টি পশু বিক্রি হয়েছে ১৯৫ কোটি ৭৮ লাখ ৫৩ হাজার ৯৭০ টাকায়। এদিন অনলাইনে পশুর ছবি আপলোড হয়েছে ৪২ হাজার ৩৪০টি।

আর গত ২ জুলাই থেকে ১৮ জুলাই পর্যন্ত ১৭ দিনে অনলাইনে ৩ লাখ ১৮ হাজার ৫০৭টি পশু বিক্রি হয়েছে, যার বাজারমূল্য ২ হাজার ২০৬ কোটি ৬২ লাখ ৪৩ হাজার ৫৬৮ টাকা। এ পর্যন্ত গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়াসহ কোরবানিযোগ্য পশুর অনলাইন বাজার বসেছে প্রায় ১৮০০টি। এসব হাটে মোট গবাদিপশুর ছবি আপলোড হয়েছে ১৭ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬টি।

প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের দেওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, অনলাইনে পশু বিক্রিতে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে চট্টগ্রাম বিভাগ। এ বিভাগে এখন পর্যন্ত মোট এক লাখ ৪৯ হাজার ২৮৫টি পশু বিক্রি হয়েছে, যার বাজারমূল্য ১ হাজার ৭৪ কোটি ৩৫ লাখ ৮৫ হাজার ৯৪৮ টাকা।

পরের স্থানে রয়েছে ঢাকা বিভাগ। এ বিভাগে এখন পর্যন্ত ৪৬ হাজার ২১৯টি পশু বিক্রি হয়েছে ৪৩৬ কোটি ৩৮ লাখ ৮৫ হাজার ৯৪৮ টাকায়।

রাজশাহী বিভাগে ৪৬ হাজার ৩০৮টি পশু বিক্রি হয়েছে ২৬৯ কোটি ৭৩ লাখ ৮৯ হাজার ৪৯০ টাকায়। খুলনা বিভাগে ১৯ হাজার ৩৪৪টি কোরবানির পশু বিক্রি হয়েছে ১২৩ কোটি ১৫ লাখ ৫৯ হাজার ৮০০ টাকায়। বরিশাল বিভাগে ২ হাজার ৮৪৮টি গবাদি পশু বিক্রি হয়েছে ১৯ কোটি ৬১ লাখ ৮৬ হাজার ৪০০ টাকায়।

সিলেট বিভাগে ৩ হাজার ৭৫৯টি কোরবানির পশু বিক্রি হয়েছে ২১ কোটি ৭১ লাখ ৮২ হাজার ১৫৮ টাকায়। রংপুর বিভাগে ৪৮ হাজার ৭৮৮টি পশু বিক্রি হয়েছে ২৪৪ কোটি ২৭ লাখ ৪৭ হাজার ২৯০ টাকায়। ময়মনসিংহ বিভাগে ১ হাজার ৯৬৫টি পশু বিক্রি হয়েছে ১৭ কোটি ৩৭ লাখ ৮১ হাজার ৪৩০ টাকায়।

প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের সম্প্রসারণ শাখার পরিচালক ডা. দেবাশীষ দাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রতিদিনই অনলাইনে পশু বিক্রির পরিমাণ বাড়ছে। অনলাইন বাজার মূলত খামারি ও ক্রেতাদের মধ্যে একটা মেলবন্ধন তৈরিতে অন্যতম ভূমিকা রাখছে। কোনো খামারি চাইলে স্থানীয় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করে তাদের পশু অনলাইনে বিক্রি করতে পারেন। এছাড়া খামারিদের যে কোনো তথ্য প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা সরবরাহ করছেন।

প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের খামার শাখা সূত্র জানায়, সারা দেশে চলতি বছর কোরবানিযোগ্য এক কোটি ১৯ লাখ ১৬ হাজার ৭৬৫টি পশু প্রস্তুত রয়েছে। গত বছর প্রস্তুত ছিল ১ কোটি ১৮ লাখ ৯৭ হাজার ৫০০টি পশু। আর কোরবানি উপলক্ষে জবাই করা পশুর সংখ্যা ছিল ৯৪ লাখ ৫০ হাজার ২৬৩টি। অবশ্য তার আগের বছরে এক কোটি চার থেকে পাঁচ হাজার পশু জবাই হয়েছিল।

এদিকে অনলাইন কিংবা ডিজিটাল প্লাটফর্ম থেকে কেনা কোরবানির পশু পরিবহনের সময় হাসিল দাবি বা আদায় করা আইনানুগ নয়। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) চিঠি দিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। ১৪ জুলাই এ চিঠি পাঠানো হয়।

একে/এনএফ