মাত্র ১৪ দিন বয়সী শিশু কন্যা ঝর্ণাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করে পালিয়ে গেছেন বাবা-মা।

সোমবার (১৯ জুলাই) চমেক হাসপাতালের শিশু সার্জারি ওয়ার্ডের নার্সিং ইনচার্জ শাহিনা সুলতানা ঢাকা পোস্টকে বলেন, রোববার দুপুরে শিশু সার্জারি ওয়ার্ডে শিশুটিকে ভর্তি করান বাবা-মা। নিবন্ধন খাতায় শিশুটির নাম ঝর্ণা এবং তার বাবার নাম লেখা ছিল মো. জসিমউদদীন। ঠিকানায় লেখা ছিল খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি।

তিনি বলেন, শিশুটিকে হাসপাতালের শিশু সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করে বেডে রেখেই পালিয়ে যান মা-বাবা। চিকিৎসকরা শিশুটিকে দেখতে গিয়ে অভিভাবকের খোঁজ করেন। কিন্তু পাওয়া যায়নি। এরপর নিবন্ধন খাতায় দেওয়া ফোন নাম্বারে ফোন করলে জানা যায়, নাম্বারটি ব্যবহার করা হচ্ছে না। এরপর অনেক খোঁজাখুঁজি করেও মা-বাবার সন্ধান পাওয়া যায়নি।

তিনি আরও বলেন, শিশুটি হাতে ও পায়ে কিছু ত্রুটি নিয়ে জন্মেছে। তার হাতের বেশ কয়েকটি আঙ্গুল জোড়া লাগানো আর দুই পা কিছুটা বাঁকানো। সম্ভবত এসব কারণেই তাকে ফেলে রেখে গেছেন। তবে শারীরিকভাবে এখন সম্পূর্ণ সুস্থ আছে শিশুটি।

শাহিনা আরও বলেন, বর্তমানে হাসপাতালের বেডেই আছে শিশুটি। হাসপাতালের নার্স, আয়া ও চিকিৎসকরা তার দেখাশোনা করছেন। মনে হয় শিশুটির মা-বাবার আরও মেয়ে সন্তান আছে অথবা হাতে পায়ের সমস্যার কারণে ১৪ দিনের একটি অবুঝ শিশুকে ফেলে রেখে পালিয়ে গেছেন তারা।

তিনি আরও বলেন, বাচ্চাটির যে সমস্যা, তা অপারেশন করলেই অনেক সময় ভালো হয়ে যায়। 

১৪ দিন বয়সী শিশুটির বর্তমানে চমেক হাসপাতালের ৮৪ নম্বর শিশু সার্জারি ওয়ার্ডে আছে। তার ভরণপোষণের আর চিকিৎসার যাবতীয় দায়িত্ব নিয়েছে চমেক হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতি। 

রোগী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও সমাজসেবা কর্মকর্তা অভিজিৎ সাহা ঢাকা পোস্টকে বলেন, শিশুটির কাপড়-চোপড়, খাবার ও চিকিৎসার সব দায়িত্ব আমরা নিয়েছি। ঈদের জন্য নতুন জামা কিনে দিয়েছি। দুধ, ডায়পার, ফ্লাক্স  থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় সবকিছু  কিনে দিয়েছি। সার্বক্ষণিক শিশুটির খোঁজ-খবর রাখছি। ওয়ার্ডের দায়িত্বরতদের বলে দিয়েছে কোনো কিছু প্রয়োজন হলে আমাকে জানাতে। আমরা সব কিছুর ব্যবস্থা করব। 

তিনি আরও বলেন, শিশুটিকে প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে রউফাবাদের সমাজসেবা অধিদফতরের ছোটমণি নিবাসে আশ্রয়ণের ব্যবস্থা করা হবে। এর আগে কিছু নিয়ম আছে তা পালন করতে হবে। সেগুলোর কাজও শুরু হয়েছে। তবে মনে হচ্ছে শিশুটিকে হাসপাতালের ওয়ার্ডেই ঈদ করতে হবে। 

এ বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবির বলেন, এ ঘটনায় পাঁচলাইশ থানায় একটি জিডি করা হয়েছে। শিশুটি যাতে নিরাপদ আশ্রয় পায় সে ব্যবস্থা করা হবে।

কেএম/এইচকে