সাভারের আশুলিয়ায় বকেয়া বেতনের দাবিতে প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে কারখানার সামনে অবস্থান করছেন শ্রমিকরা। ঈদের আগের দিনও বেতন না পেয়ে এসব শ্রমিকরা এখন চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন। কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতন-ভাতা পরিশোধ না করে পালিয়েছে বলে অভিযোগ শ্রমিকদের।

মঙ্গলবার (২০ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সাভারের আশুলিয়ায় মির্জানগর বেলতলা এলাকার এফজিএস নিটওয়্যার লিমিটেড কারখানার সামনে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়। দুই মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকরা অবস্থান নিয়েছেন।

শ্রমিকরা জানান, প্রতি মাসেই কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতন পরিশোধ না করে টালবাহানা করতে থাকে। বেতনের সময় এলেই কারখানা কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছে এসে কান্নাকাটি করে মাফ চায়। বারবার সময় চায়, এক মাসের বেতন অন্য মাসে ছাড়া কখনই দেয় না। একদিন পরেই ঈদ, আর ঈদের আগেও কারখানা কর্তৃপক্ষ একই রকম আচরণ করছে। তারা ব্যাংক থেকে বেতন আনার কথা বলে কারখানা থেকে পালিয়ে গেছে। ২৪ ঘণ্টা হয়ে গেল কারখানায় কেউ আসেনি। বেতন না পেলে কারখানা থেকে আমরা বের হব না।

বিক্ষুব্ধ শ্রমিক স্বর্ণা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঈদুল আজহা সামনে রেখে সারা মাস পরিশ্রম করেছি কিছু টাকার আশায়। আর ঈদের আগের দিন এসে কারখানা কর্তৃপক্ষ বলে বেতন দিতে পারব না। পরিবার আমাদের মুখের দিকে চেয়ে আছে। কখন সেমাই চিনি কেনার টাকা পাঠাব। এবার মনে হয় ঈদের দিনেও না খেয়ে থাকতে হবে।

অপর শ্রমিক রহিমা বলেন, আমরা এক মাস ২০ দিনের বেতন পাই। ঈদে নতুন কাপড় ভালো খাবারের আশায় সারা মাস কাজ করেছি। সারা মাস কাজ করে আজ ঈদের আগের দিন টাকার জন্য কারখানায় দিনরাত বসে থাকতে হয়। শ্রমিকদের প্রতি মালিকপক্ষের এমন আচরণ অত্যন্ত অমানবিক। অন্যান্য মাসে যা করার করে, আমরা মেনেই নেই। কিন্তু ঈদের আগেই বেতন ছাড়া আমরা কীভাবে ঈদ উদযাপন করব। সন্তানদের একটু ভালো খাবার একটা নতুন জামা কিনে দিতে পারব না। তাহলে সারা মাস কাজ করার কী প্রয়োজন। আমরা ঈদ উৎসব নিয়ে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে আছি। আমরা আমাদের বেতন চাই। আমরা শ্রমিক মূল্য চাই। বেতন না দিলে কারখানাতেই ঈদের দিন না খেয়ে কাটিয়ে দেব।

কারখানার অ্যাডমিন ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন বলেন, মূলত আমি কারখানার কাগজপত্রের কাজকর্ম করে থাকি। আমি অ্যাকাউন্টস অফিসার ছিলাম। একজন চলে যাওয়ায় তার দায়িত্ব আমাকে পালন করতে হয়। টাকা-পয়সার দায়িত্ব কারখানা মালিকের। শ্রমিকরা গতকাল থেকেই কারখানায় অবস্থান করছে। আমি কারখানা মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি। 

মাহিদুল মাহিদ/জেডএস