ঈদের পরদিন সকালে এত মানুষ ঢাকায় আসে এই প্রথম দেখলাম। ১৬ বছর ধরে ঢাকায় থাকার জীবনে আমি নিজেও এই প্রথম ঈদের পরদিন সকালে ঢাকায় এলাম।

বৃহস্পতিবার (২২ জুলাই) সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে নেমে মনের কষ্টে কথাগুলো বলছিলেন ব্যবসায়ী আবুল হাসেম। জীবিকার প্রয়োজনে কেরানীগঞ্জের কালীগঞ্জে ব্যবসা করেন তিনি। সুযোগ থাকলে আরও ক’দিন পরিবারের সঙ্গে সময় কাটিয়ে আসার বাসনা ব্যক্ত করেন।

পবিত্র ঈদুল আজহা শেষে শুক্রবার (২৩ জুলাই) সকাল থেকে সরকারের জারি করা ‘কঠোর বিধিনিষেধ’ সামনে রেখে রাজধানীতে ফিরতে শুরু করেছেন কর্মজীবী মানুষ।

সরেজমিন দেখা যায়, সদরঘাটে ঢাকামুখী মানুষের ব্যাপক চাপ। কেউ পরিবার নিয়ে আবার কেউ একা চাকরি বা ব্যবসার সুবাদে ঢাকায় ফিরছেন। সকালে বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনার লঞ্চ ঘাটে ভিড়লেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মাদারীপুর, শরীয়তপুর, চাঁদপুর, মুন্সিগঞ্জের লঞ্চ ভিড়তে শুরু করে।

শরীয়তপুর থেকে ঢাকায় ফেরা সোলেমান মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঈদের দুই দিন আগে পরিবার নিয়ে বাড়িতে গিয়েছিলাম। কাল থেকে লকডাউন শুরু হবে তাই বাড়িতে পরিবার রেখে ঈদের পরদিন ঢাকায় ফিরলাম। একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করি। শনিবার থেকে নিয়মিত অফিস শুরু হবে। সেজন্য ঢাকায় এসেছি। তবে কাল থেকে লকডাউন না থাকলে আরও দুদিন বাড়িতে কাটাতে পারতাম।

লঞ্চে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে এ যাত্রী বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি তো দূরের কথা ঠাসাঠাসি করে লোকজনকে ঢাকায় ফিরতে দেখলাম। কোনোকিছুই মানা হচ্ছে না। অনেকের মুখে তো মাস্কও নেই।’

যাত্রী আবুল হাসেম বলেন, ঈদের পরদিন সকালে এত মানুষ ঢাকায় আসেন এই প্রথম দেখলাম। ১৬ বছর ধরে আমি নিজেও ঢাকা থাকার জীবনে এই প্রথম ঈদের পরদিন সকালে ঢাকায় এলাম। সাধারণত ঈদ করে প্রতিটা মানুষ দুই তিন দিন বাড়িতে থাকতে চায় পরিবারের সঙ্গে। কিন্তু এবার ঈদের পরদিন ঢাকায় এভাবে আসতে হবে ভাবতেও পারিনি। বিষয়টা আমাদের এবং পরিবারের জন্য অনেক কষ্টের।’ সরকারের উচিত ছিল লকডাউন আরও দু'তিন দিন পর দেওয়া, বলেন তিনি। 

এদিকে শুক্রবার (২৩ জুলাই) থেকে শুরু হতে যাওয়া বিধিনিষেধ গতবারের চেয়ে কঠোর হবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, গতবারের চেয়ে কঠিন হবে এই বিধিনিষেধ। এটি বাস্তবায়ন করতে পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনী মাঠে থাকবে। এ সময় অফিস-আদালত, গার্মেন্টস-কলকারখানা ও রফতানিমুখী সবকিছুই বন্ধ থাকবে।

টিএইচ/জেডএস