কঠোর বিধিনিষেধে জরুরি প্রয়োজনে রাজধানীর সড়কে যাতায়াতের একমাত্র বাহন রিকশা। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে রিকশাচালকরা যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

যাত্রীরা বলছেন, চলমান লকডাউনে সড়কে অন্য যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় যাত্রীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন রিকশাচালকরা।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ২৩ জুলাই থেকে সারাদেশে কঠোর বিধিনিষেধ জারি করেছে সরকার। যা শেষ হবে আগামী ৫ আগস্ট। লকডাউন চলাকালে শুধুমাত্র জরুরি সেবার সঙ্গে জড়িত যানবাহন চলাচল করবে। তাছাড়া অন্য সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে লকডাউন চলাকালেও রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে রিকশা চলাচল করতে দেখা গেছে।

বেসরকারি চাকরিজীবী তানজিন অন্তী শংকর বাস স্ট্যান্ড থেকে লালমাটিয়ায় অফিসে নিয়মিত যাতায়াত করেন ৪০ টাকা ভাড়ায়। আজ একই দূরত্বে তাকে ভাড়া দিতে হয়েছে ৮০ টাকা।

তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি যখন রিকশাওয়ালার কাছে জানতে চাইলাম ভাড়া কত? তখন তিনি বললেন, ১০০ টাকা। আমি তো অবাক। হঠাৎ করে ভাড়া দেড়গুণ হলো কীভাবে? পরে দামাদামি করে ৮০ টাকায় এলাম। সঙ্গে ব্যাগ ছিল, না হলে হেঁটেই আসতাম।

ক্ষোভ প্রকাশ করে আমজাদ হোসেন নামে এক যাত্রী বলেন, গুলিস্তান থেকে শ্যামলীতে রিকশায় এসেছি ৪০০ টাকায়। এটা কোনো কথা হতে পারে না। সুযোগে যে, যেভাবে পারছে ভাড়া আদায় করছে। সবাই যেন রিকশা চালকদের কাছে জিম্মি হয়ে গেছে। ভাড়া নিয়ে কারও কোনো মাথা ব্যথা নেই।

ধানমন্ডির ল্যাব এইড হাসপাতালের সামনে রিকশার জন্য অপেক্ষা করছিলেন আশফাক জামান। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার বোন অসুস্থ, হাসপাতালে ভর্তি। হাসপাতাল থেকে শেওড়াপাড়ায় দিনে দুবার যাতায়াত করতে হয়। দুদিন ধরে প্রতিবার ৪০০ টাকা করে রিকশা ভাড়া দিতে হচ্ছে। অথচ আগে এই পথে ২০০ টাকায় যাতায়াত করা যেত। রিকশাচালকরা কসাইয়ের মতো আচরণ করছে।

রাজধানীর বিভিন্ন জায়গার অন্তত ১০ জন রিকশাচালকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদ উপলক্ষে একটু বেশি ভাড়া আদায় করছেন তারা। তাছাড়া বিধিনিষেধে লোকজন কম থাকায় ট্রিপের সংখ্যাও কমে গেছে। তাই ভাড়া একটু বেশি আদায় করতে হচ্ছে। তবে অনেক রিকশাচালক ন্যায্য ভাড়া নিচ্ছেন বলে দাবি করেন।

রিকশাচালক আলমগীর বলেন, ঢাকায় এখন মানুষ কম। তাই যাত্রীও কম। আমাদেরও তো পেট আছে। দিন এনে দিন খেতে হয়। তার মধ্যে পুলিশ যখন তখন রাস্তায় থামিয়ে যাত্রী নামিয়ে দেয়। তখন যাত্রীরাও ভাড়া না দিয়ে চলে যান। তাই অন্য সময়ের চেয়ে ভাড়া এখন একটু বেশিই আদায় করা হচ্ছে। তবে সেটা ডাবল নয়, ন্যায্য ভাড়ার থেকে ২০-৩০ টাকা বেশি হবে। 

মোহাম্মদপুর এলাকার রিকশাচালক বরকত ঢাকা পোস্টকে বলেন, এটা সত্য অনেক চালক যাত্রীদের বিপদে ফেলে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। তবে এভাবে জুলুম করা ঠিক হচ্ছে না। আমি এখনও ন্যায্য ভাড়াই নিচ্ছি। মোহাম্মদপুর বাস স্ট্যান্ড থেকে ৫০ টাকায় একজন যাত্রী নিয়ে খামারবাড়ি আসলাম। তার সঙ্গে তো আমার কোনো তর্ক হয়নি। একই পেশার সবাই তো আর ভালো হয় না, খারাপও আছে। 

এমএইচএন/এসকেডি