প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা/ ফাইল ছবি

বাংলাদেশের জনগণই সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভরণ-পোষণ দেয়। এ কথা স্মরণ করিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘জনগণই আপনাদের (সরকারি কর্মচারী) খাবার যোগান দেয়। তাই তাদের সেবা দেওয়া সবার দায়িত্ব। তাদের জন্য আমরা কী করতে পারলাম, তাদের কতটুকু সেবা দিতে পারলাম তা-ই সব চেয়ে বড় বিষয়।’

মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) ‘জাতীয় পাবলিক সার্ভিস দিবস’ উদযাপন এবং ‘জনপ্রশাসন পদক ২০২০ ও ২০২১’ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে যুক্ত হন তিনি। 

জনগণের সার্বিক উন্নয়ন করা সকলের দায়িত্ব উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তা যদি না হয় তাহলে কিন্তু একটা দেশ এগোতে পারে না।’

এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার গঠন করা বা ক্ষমতায় আসা ভোগ-বিলাসের বিষয় নয়। আমি প্রধানমন্ত্রী হয়েছি বলে মহা কিছু হয়ে গেছি তা নয়। এটা একটা বিরাট দায়িত্ব। সেই সাথে আমার যারা সহকর্মী, বিশেষ করে সরকারি কর্মচারী যারা- আপনাদেরও দায়িত্ব।’

তিনি বলেন, ‘আমি চিন্তা করি, করোনাকালীন সময়ে আমাদের এই ডিজিটাল ডোরটা যদি ওপেন না থাকত আমরা কী অবস্থায় যেতাম? আমার সরকার চালানো মুশকিল হয়ে যেত। মানুষের জীবনযাত্রায় একটা বিরাট প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হতো। আজকের আধুনিক প্রযুক্তির শিক্ষা আমরা নিয়েছি বলেই কিন্তু এটা সম্ভব হচ্ছে।’

সরকার প্রধান বলেন, ‘সেক্ষেত্রে আমি বলব আমাদের যারা সরকারি কর্মচারী আছেন তাদের এটা চিন্তা করতে হবে যে, বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে প্রতিনিয়তই পরিবর্তন আসবে। নতুন নতুন উদ্ভাবন হবে। তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। তাহলে আমরা বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারব।’

তিনি বলেন, ‘আজ আমাদের গ্রাম পর্যন্ত মানুষ (ডিজিটাল) সেবা পাচ্ছে। মানুষের সামাজিক নিরাপত্তা দিয়ে সবকিছু আমরা ডিজিটাল পদ্ধতিতে করে যাচ্ছি। এতে যথেষ্ট সময় বাঁচছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইতোমধ্যে করোনার টিকা কেনা শুরু হয়েছে। টিকা দেওয়াও শুরু হয়েছে। ব্যাপকভাবে টিকা দিতে হবে। যাতে দেশের সকলেই সুরক্ষিত থাকে। ইতোমধ্যে আমি নির্দেশ দিয়েছি‑ পরিবারের সদস্য ছাড়াও বাড়ির গৃহকর্মী, গাড়িচালকসহ সকলকেই যেন টিকা দিয়ে দেওয়া হয়। তাহলে সবাই সুরক্ষিত থাকতে পারবে। এর জন্য প্রয়োজনে যত টাকা লাগবে, যত টিকা প্রয়োজন হবে আমরা কিনব। ভবিষ্যতে আমরা বাংলাদেশে টিকা তৈরি করব। যাতে মানুষের কোনো অসুবিধা না হয়।’

তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছি বলেই আজ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে অল্প সময়ের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হতে পেরেছি। সবাই যার যার জায়গায় কাজ করেছে বলেই মানুষ তার সুফল পেয়েছে, দেশের উন্নতি হয়েছে। নাহলে কখনোই আমরা এত তাড়াতাড়ি উন্নতি করতে পারতাম না।’

জনপ্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনপ্রশাসনে যারা আছেন তাদের জনগণের সেবা করা, দেশের সেবা করা- এটাই সবচেয়ে বড় কাজ। আজ বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এতে জনপ্রশাসনের অবদান রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এই করোনার সময় সেবা দিতে গিয়ে প্রশাসন থেকে শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনেকেই জীবন দিয়ে গেছেন। আমাদের দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও সর্বক্ষণ সক্রিয় রয়েছেন। তারা জনগণের পাশে রয়েছেন। করোনায় আমরা আমাদের অনেক নেতাকর্মীকেও হারিয়েছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের ওপর অনেক বার আঘাত এসেছে। বারবার ঝড়-ঝাপটা গেছে। এবারের সরকারের সময় আমাদের অনেক প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয়েছে। কিন্তু একে একে সেগুলো আমরা মোকাবিলা করে এগিয়ে যাচ্ছি।’ 

এইউএ/এইচকে