ডেঙ্গু আক্রান্ত সেই সাকিবের চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন সাঈদ খোকন
ডেঙ্গু আক্রান্ত সেই সাকিবের উন্নত চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন। এছাড়া সাকিবের বাবা-মা ও বোনকে নিজ পৈতৃক বাড়িতে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন তিনি। সাকিব এখন পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (মিটফোর্ড হাসপাতাল) চিকিৎসাধীন।
মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহা. হাবিবুল ইসলাম সুমন জানিয়েছেন, সোমবার (২ আগস্ট) রাজধানীর তিনটি সরকারি হাসপাতালে ঘুরেও ডেঙ্গু আক্রান্ত ১০ বছরের ছেলেকে ভর্তি করাতে পারেননি বাবা হারুনুর রশীদ। চতুর্থ হাসপাতালে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স চালকের কাছে আকুতি জানান। কিন্তু দাবি অনুযায়ী ভাড়া না দিতে পারায় চালক রাজি হচ্ছিলেন না। তখন কান্নায় ভেঙে পড়েন হারুনুর রশীদ। পরে অবশ্য ৯৯৯-এ ফোন করে তাদের সহায়তায় ছেলেকে মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বিষয়টি জেনে সাকিবের চিকিৎসার প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিতে মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তাসহ সংগঠনের সমন্বয়কারীদের নির্দেশ দেন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সাঈদ খোকন।
বিজ্ঞাপন
হাবিবুল ইসলাম সুমন বলেন, রাত ১২টার দিকে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে সাকিবকে খুঁজে পাই। এখন ওই হাসপাতালের দুই নম্বর ভবনের ছয়তলায় চিকিৎসাধীন রয়েছে। আজ (৩ আগস্ট) চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সাকিব হাসপাতালে ভর্তি হলেও ঢাকায় তার বাবা-মা, ছোট বোন আর নানিসহ সবার থাকা এবং খাওয়ার জায়গা নেই। তাই তাদের নাজিরা বাজারে মেয়র মোহাম্মদ হানিফের ঐতিহ্যবাহী ভবনে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই ভবনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে থেকেছেন। এখন বাড়িটিতে নাগরিক সেবা কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
বিজ্ঞাপন
সাকিবের বাবা হারুনুর রশীদ গাজীপুরের টঙ্গীর একটি ইলেকট্রিক দোকানের কর্মচারী। হারুনুর রশীদ মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের কাছে জানিয়েছেন, করোনার কারণে দোকান বন্ধ থাকায় আয়-রোজগার নেই। পরিচিতদের কাছ থেকে ঋণ করে স্ত্রী, শিশুকন্যা ও শাশুড়িকে সঙ্গে নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে ঢাকায় রওনা হই। সকাল থেকে সরকারি কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাই। কিন্তু শয্যা খালি নেই- এমন অজুহাতে তারা ভর্তি নেয়নি। তারা মিটফোর্ড হাসপাতাল নিতে বলেন। কিন্তু পকেটে টাকা না থাকায় অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে ছেলেকে হাসপাতালে নিতে পারছিলাম না।
তিনি জানান, এখন সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন। মুঠোফোনে তিনি একাধিকবার সাকিবের সুচিকিৎসাসহ সব প্রয়োজনে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা তার পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞ।
এ বিষয়ে ডিএসসিসির সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে সারাবছরই নিম্নআয়ের পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা, খাদ্য সামগ্রী, আর্থিক সহায়তা করে থাকি। এখন সাকিবের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। যতদিন সাকিবের চিকিৎসা চলবে, ততদিন তার বাবা-মাসহ পরিবারের সদস্যদের বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত নাজিরা বাজারের ওই বাড়িতেই থাকবেন।
এএসএস/এসএসএইচ