চিত্রনায়িকা পরীমণিকে নিয়ে ধারাবাহিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আসছেন নারীবাদী লেখিকা তসলিমা নাসরিন। মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) দিবাগত রাতে লেখিকা তসলিমা নাসরিন তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দুটি পোস্ট দিয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন, নায়িকা পরীমণিকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। 

ঢাকা পোস্টের পাঠকদের জন্য তসলিমা নাসরিনের সেই পোস্ট দুটি তুলে ধরা হলো।  

তসলিমা নাসরিন অভিযোগের সুরে বলেছেন, ‌‘মিথ্যে মামলায় মেয়েটিকে ফাঁসানো হয়েছে। মেয়েটির বৃদ্ধ নানা এসেছেন আদালতে।  অপারেশনের পর অসুস্থ শরীর নিয়েই এসেছেন। তার সঙ্গে দেখাও করতে দেওয়া হয়নি মেয়েটিকে। মেয়েটি দিন-রাত কাঁদছে। মাদক, পর্ন ছবি-- সব বানানো। কার এত ক্ষোভ মেয়েটির ওপর? মেয়েটিকে ধ্বংস না করে ছাড়বে না পণ করেছে!  মেয়েটির মা মারা গেছে তার তিন বছর বয়সে। মা-বাবা কেউ নেই তার। গ্রামের স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান শিক্ষক ছিলেন নানা। নীতিবান, আদর্শবান নানার কাছে বড় হয়েছে মেয়েটি।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘এমন দয়ামায়া মেয়েটির, দুঃস্থ শিল্পীদের জন্য প্রতিবছর দান করে। এই দান করা নিয়েও কুৎসা, টাকা কোথায় পেল দান করার! সিনেমায় তো অনেকদিন, নিজের জন্য একটি ফ্ল্যাটও কেনেনি এখনও। টাকা হাতে এলে বিলিয়ে দেয় গরিবদের। এই সরল সোজা শিশুর মতো হাসিখুশি মেয়েটি কষ্ট পাচ্ছে। একটি গাড়ি কিনেছে, তাতেও লোকেরা ক্ষুদ্ধ, টাকা কোথায় পেল গাড়ি কেনার! এই সেদিন পর্যন্ত মিডিয়া তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিল। যেই না এক ধনী ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ করল, অমনি মিডিয়া তাকে হেন অপবাদ নেই যে দিচ্ছে না। পুরো দেশের পুরুষতন্ত্র, পুঁজিতন্ত্র, ধর্মতন্ত্র, লিঙ্গতন্ত্র ক্ষেপে উঠেছে। মেয়েটিকে কেউ বাঁচতে দিতে চাইছে না। 

যদি আত্মহত্যা করে মেয়েটি! করতেই পারে। তখন নারীবিদ্বেষী এই কুৎসিত সমাজকে কি ভবিষ্যত ক্ষমা করবে?’

অপর এক পোস্টে তসলিমা নাসরিন লিখেছেন, ‘পরীমণি সমাজের অধিকাংশ মেয়ের মতোই ভুল মানুষের প্রেমে পড়ে। এক সাংবাদিকের প্রেমে পড়েছিল, তাকেই বিয়ে করবে ঘোষণা করেছিল। শেষ মুহূর্তে সে বিয়েটা আর করেনি। কারণ সেই সাংবাদিক পরীমণির সিনেমার নিন্দে করেছিল, তাকে সিনেমা করতে বাধা দিচ্ছিল। এমন লোককে বিয়ে না করার সিদ্ধান্তটি পরীমণি ঠিক নিয়েছিল। সুদর্শন পুলিশ অফিসারের প্রেমেও পড়েছিল। অফিসারটি বলেছিল, সে অবিবাহিত। পরে যখন জানতে পারে সে বিবাহিত,   পরীমণি সরে আসে। মেয়ে, তার ওপর সুন্দরী, তাকে যে কতভাবে পুরুষেরা এক্সপ্লয়েট করে! 

এই যে তাকে রিমান্ডে নিচ্ছে দিনের পর দিন, রিমান্ডে তো শুনেছি মানুষকে প্রচণ্ড নির্যাতন করা হয়। রিমান্ডে নিয়ে পরীমণিকে তো মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছেই, শারীরিক নির্যাতন করা হচ্ছে না তো? ধর্ষণ করা হচ্ছে না তো?’

পিএসডি/ওএফ