২০০৪ সালের ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলায় গ্রেফতার পরবর্তী ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন জজ মিয়া। ওই হামলার ওপর নির্মিত এক তথ্যচিত্রে গ্রেফতার পরবর্তী বিভিন্ন ঘটনার বর্ণনা দেন তিনি।

তার বর্ণনা মতে, ‘পাঞ্জাবি পায়জামা পরা দাঁড়ি আছে, তার চোখ বাঁধা, আমার চোখ খোলা ছিল। মোখলেছ সাহেব আমারে ইশারায় কইতাছে দেখছোত তো? চিন্না রাখ। পরে আমারে লইয়া গেল। আমারে চিনায়াইয়া রাখল। পরে জানি কইতে পারি, আমি চিন্না রাখলাম। পরে ওনারে আমার সাথে ওই মামলায় জড়াইয়া দিলো।’ 

জজ মিয়া বলেন, ‘২১ আগস্টে যে গ্রেনেড হামলা হইছে ভিডিও সিডিটা তারা ছাড়ছে। বলে দেখছোত তো? হেরা আমারে এক জায়গা চাইর পাঁচবার রিপ্লাই দেখাইছে। পরে আমারে কইতাছে, এরা এরা ছিল এদের সঙ্গে তুইও ছিলি। এই এই ভাবে আক্রমণ করা হইছে। তগো উদ্দেশ্য ছিল মারার লাইগা, তুই এইটা ফালাইয়া থুইয়া, পালাইয়া গেছত। এরা মারছে তুই এদের সাথে ছিলি। এইভাবে তুই কোর্টে বইলা যাবি।’ 

জজ মিয়া বলেন, ‘আমারে অনেকের ছবি দেখাই কইছে চিন্না রাখ। বাইচান্স অন্য অফিসার আইয়া তরে জিগাইতে পারে। তখন কইতে পারে এদের মধ্যে অমুকের ছবিডা বাইর কইরা দে তো। তখন তুই বাইর কইরা দিবি। তুই নিজে দোষী না অইলে আরেকজনরে দোষী করতে পারবি না।’ 

তিনি বলেন, ‘আমি যখন কোর্টে ইস্টেটমেন্ট (স্টেটমেন্ট) দেই ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে, তখন আমার সামনে ছিল মুন্সি আতিক সাব। আরও অফিসার ছিল। ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেওয়ার পর টেপ রেকর্ডার আমার সামনে রাইখা আমারে কইতাছে দেখো তুমি যদি এইটা অস্বীকার করো তাহলে এই মামলার মূল আসামি অইয়া যাইবা।’ 

উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার লক্ষ্যে তার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা করা হয়। ভয়াবহ ওই ঘটনায় তদন্ত ভিন্ন খাতে নিতে প্রথমে গ্রেফতার করা হয় শৈবাল সাহা পার্থ নামে এক তরুণকে। ২০০৫ সালের ৯ জুন নোয়াখালীর সেনবাগ থেকে ধরে আনা হয় জজ মিয়া নামের এক যুবককে। জজ মিয়াকে ১৭ দিন রিমান্ডে রেখে, ভয়ভীতি ও প্রলোভন দেখিয়ে তার কাছ থেকে একটি সাজানো জবানবন্দি আদায় করে সিআইডি। ২০০৫ সালের ২৬ জুন আদালতে দেওয়া ওই কথিত স্বীকারোক্তিতে জজ মিয়া বলেছিলেন, তিনি আগে কখনো গ্রেনেড দেখেননি; গ্রেনেড ও বোমার মধ্যে পার্থক্য তিনি জানেন না। পাঁচ হাজার টাকার বিনিময়ে বড় ভাইদের নির্দেশে তিনি অন্যদের সঙ্গে গ্রেনেড হামলায় অংশ নেন। ওই বড় ভাইয়েরা হচ্ছেন শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন, জয়, মোল্লা মাসুদ, মুকুল প্রমুখ।

এইউএ/এসকেডি