স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল

বরিশালের ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন আখ্যা দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ভুল বোঝাবুঝি হতেই পারে। এটা সবসময় হয়ে থাকে, নতুন কিছু নয়। 

সোমবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভ‍িনিউয়ে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগ এ সভার আয়োজন করে। 

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বরিশালের ঘটনা একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের দায়িত্ব পালন করেছে। রাজনীতিবিদরা রাজনীতি করেন। তাদের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি হতেই পারে। এটা সবসময় হয়ে থাকে, নতুন কিছু নয়। 

বঙ্গবন্ধুর খুনিদের অবস্থান নিয়ে তিনি বলেন, খুনিদের দু-একজনের অবস্থান বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাদের দেশে আনার প্রক্রিয়া চলছে। যাদের অবস্থান নিশ্চিত হয়েছে, তাদের দেশে এনে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। 

মন্ত্রী বলেন, ঘাতকরা চেয়েছিল, বঙ্গবন্ধুর রক্ত দেশ থেকে মুছে ফেলতে, কিন্তু তাদের সে চক্রান্ত সফল হয়নি। তাই জীবিত মুজিবের চেয়ে মৃত মুজিব অনেক বেশি শক্তিশালী।

গত বুধবার রাতে ব্যানার অপসারণকে কেন্দ্র করে বরিশালে পুলিশ, আনসার ও স্থানীয় ছাত্রলীগ সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। অভিযোগ ওঠে, ওই রাতে সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সরকারি বাসভবনে হামলা চালান স্থানীয় ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ, শ্রমিক ইউনিয়ন, আওয়ামী লীগ নেতা ও সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা। 

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে একটি মামলা দায়ের করেন সদর থানার ইউএনও মো. মুনিবুর রহমান। অন্যটি করেন কোতোয়ালি মডেল থানার উপপরির্দশক (এসআই) শাহজালাল মল্লিক। দুই মামলাতেই প্রধান আসামি করা হয় মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকে। 

এর মধ্যে মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (বিএএসএ)। বৃহস্পতিবার কার্যনির্বাহী পরিষদের এক জরুরি সভা শেষে গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবির কথা জানায় তারা।

সংঘর্ষের ঘটনার পরদিন বরিশালে সেরনিয়াবাত ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) প্যানেল মেয়র গাজী নঈমুল হোসেন লিটু অভিযোগ করেন, ব্যানার অপসারণ করতে গিয়ে সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ইউএনওর বাধার মুখে পড়েন। ইউএনও দম্ভোক্তিসহ অশোভন আচরণ করেন এবং সবার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতে থাকেন। পরিস্থিতি শান্ত করতে সেখানে যান মেয়র। তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন ইউএনও। 

এদিকে, রোববার ইউএনও মুনিবুর রহমান ও কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে দুটি মামলার আবেদন করা হয়েছে। বরিশালের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুম বিল্লাহর আদালতে মামলা দুটির আবেদন করা হয়। 

এর মধ্যে একটি মামলার আবেদন করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম খোকন। অপর মামলার আবেদন করেন বিসিসির রাজস্ব কর্মকর্তা বাবুল হালদার। দুই মামলাতেই ইউএনও মুনিবুর রহমানকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। মামলা দুটি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।

বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনিবুর রহমানের সরকারি বাসভবনে হামলা ও সংঘর্ষের বিষয়টি নিয়ে সবশেষ রোববার রাতে বিভাগীয় কমিশনার সাইফুল ইসলাম বাদলের বাসভবনে সমঝোতা হয়। বৈঠকে জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার, পুলিশ কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান, বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহসহ সরকারি কর্মকর্তারা ও দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এইউএ/আরএইচ