পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন ও দক্ষিণ আফ্রিকার কৃষি, ভূমি সংস্কার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রী অ্যাঞ্জেলা থোকোডিদিজা

দক্ষিণ আফ্রিকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও নেলসন ম্যান্ডেলার নামে কৃষি সহযোগিতা কেন্দ্র স্থাপনের জন্য দেশটিকে প্রস্তাব দিয়েছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। 

সোমবার (২৩ আগস্ট) দক্ষিণ আফ্রিকার কৃষি, ভূমি সংস্কার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রী অ্যাঞ্জেলা থোকোডিদিজার সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন। এ সময় এ প্রস্তাব দেন মোমেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, দুই মন্ত্রীর বৈঠকে দুই দেশের কৃষিক্ষেত্রে সম্ভাব্য সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়। ড. মোমেন আফ্রিকার মন্ত্রীকে কৃষি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অর্জনের কথা জানান। মোমেন বলেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদসহ কৃষির বিভিন্ন অংশ এবং প্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতা উভয় দেশকে উপকৃত করবে।

মোমেন অ্যাঞ্জেলাকে প্রস্তাব করেন যে, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রচুর অব্যবহৃত জমি বিবেচনায় নিয়ে উভয় দেশ যৌথ উদ্যোগে কৃষি প্রকল্প স্থাপন করতে পারে। বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের জ্ঞান এবং দক্ষতার সঙ্গে আফ্রিকার সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে চাষ প্রকল্প শুরু করা যেতে পারে। 

আফ্রিকার কৃষিমন্ত্রী জানান, উভয় দেশ পরিবেশ, বন, মৎস্য ও ভূমি সংস্কার এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে পারে। এছাড়া উভয় পক্ষই প্রকল্প বিশেষজ্ঞদের আলোচনার জন্য কৃষি বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করতে পারে।

বাংলাদেশের কৃষি খাতে উন্নয়ন, কৃষকদের ক্ষুদ্র ঋণ ও নারীর ক্ষমতায়নে কীভাবে অবদান রাখছে জানতে চান অ্যাঞ্জেলা। জবাবে মোমেন জানান, বাংলাদেশ সরকারের নিবেদিত সংস্থা আছে যারা কৃষকদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার আগে নারীদের চাকরির ক্ষেত্র ছিল শতকরা ছয় ভাগ। সরকার লক্ষ্যভিত্তিক পদ্ধতি গ্রহণ করায় তা বেড়ে শতকরা ৩৮ ভাগে পৌঁছেছে।

ড. মোমেন কৃষিমন্ত্রীকে আফ্রিকার কৃষি খাতের বিশেষজ্ঞ এবং কর্মকর্তাদের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের কৃষি কার্যক্রম দেখতে বাংলাদেশ সফরের প্রস্তাব করেন। এছাড়া দুই দেশ তৈরি পোশাক, আইসিটি এবং ফার্মাসিউটিক্যালসের মতো খাতে যৌথ উদ্যোগ নিতে পারে বলেন মোমেন।

আফ্রিকার কৃষিমন্ত্রী দুই দেশের কৃষি খাতে সহযোগিতা জোরদারে বেসরকারিভাবে পিটুপির ওপর গুরুত্ব  দেন। এক্ষেত্রে তিনি পরামর্শ হিসেবে ক্ষুদ্র ঋণ, বাজার বৃদ্ধি, বাণিজ্য, দক্ষতা উন্নয়ন এবং কৃষি অঞ্চলে ডিজিটালাইজেশনের মতো ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য প্রযুক্তিগত দল গঠন করা যেতে পারে। এছাড়া তিনি অদূর ভবিষ্যতে কৃষি এলাকায় সমঝোতা স্মারকের সমাপ্তি এবং সামগ্রিক কৃষি সম্পর্ক উন্নীত করার জন্য দুই দেশের কৃষি পরিষদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনের পরামর্শ দেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী দক্ষিণ আফ্রিকার জনগণের বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের পক্ষে বাংলাদেশের জনগণের সমর্থন ও সংহতির কথা উল্লেখ করেন। তিন  বিশেষ করে জাতিসংঘে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক দক্ষিণ আফ্রিকার জনগণের জন্য দেওয়া সহায়তার কথা উল্লেখ করেন।

এনআই/এইচকে