নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা এলাকায় অভিযান চালিয়ে সংঘবদ্ধ গাড়ি ছিনতাই চক্রের প্রধানসহ পাঁচ সদস্যকে আটক করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। ছদ্মবেশ নিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে শতাধিক গাড়ি ছিনতাই ও চুরি করে, যার মাধ্যমে অন্তত কোটি টাকার বাণিজ্য করেছে চক্রটি।

শুক্রবার (২৭ আগস্ট) বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত র‍্যাব-৪ এর একটি দল অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে আটক করে। 

এ সময় তাদের হেফাজত থেকে ছিনতাই করা তিনটি পিকআপ, একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা, একটি পিস্তল, এক রাউন্ড গুলি, তিনটি ছুরি, একটি চাইনিজ কুড়াল ও ৬টি মোবাইল জব্দ করা হয়।

আটকরা হলেন- আজিম উদ্দিন (৩৮), রফিক উল্লাহ (২৬), সেলিম (৫০), কামরুল হাসান (২৬) ও ওমর ফারুক (২৫)।

রোববার (২৮ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, গত ১১ আগস্ট রাজধানীর দারুস সালাম এলাকা থেকে গাড়ি ছিনতাই চক্রের পাঁচ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জ থেকে চক্রের প্রধান আজিমসহ আরো পাঁচ জনকে আটক করা হয়। এই চক্রে ১৫-২০ জন জড়িত। গত ৫-৬ বছর ধরে তারা দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ইতোমধ্যে শতাধিক গাড়ি ছিনতাই/চুরি করেছে।

চক্রটি ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটসহ নারায়ণগঞ্জ, সাভার ও গাজীপুরের আশপাশের এলাকায় পিকআপ, সিএনজি ছিনতাই/চুরি করে আসছিল উল্লেখ করে কমান্ডার মঈন বলেন, চক্রের প্রথম দলের সদস্যরা ছদ্মবেশ ধারণ করে গাড়ি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে। আরেক গ্রুপের

সদস্যরা মাঠ পর্যায় থেকে গাড়ি চুরি ও ছিনতাইয়ের কাজ করে।

সরাসরি ছিনতাইয়ে জড়িতরা মেকানিক কাজে অভিজ্ঞ

সরাসরি গাড়ি ছিনতাই বা চুরিতে জড়িত গ্রুপের সদস্যদের সবাই চালক ও মেকানিক কাজে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন। যাতে নির্বিঘ্নে ছিনতাই বা চুরি করা গাড়ি নিয়ে দ্রুত স্থান ত্যাগ করতে পারে। পার্কিং অবস্থায় গাড়ির লক ভেঙে নিয়ে যাওয়াসহ ছদ্মবেশে চালককে চেতনানাশক ওষুধ মেশানো খাবার খাইয়ে গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যায় তারা।

চোরাই গাড়ি সরানো হয় ঢাকার পাশ্ববর্তী জেলায়

পরবর্তী ধাপে চোরাই গাড়ি ঢাকার অদূরে কিংবা নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলার প্রত্যন্ত এলাকায় লুকিয়ে রাখে চক্রের সদস্যরা। এরপর গাড়ির মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে টাকা নিয়ে গাড়ির লোকেশন জানিয়ে দেয়। মালিক টাকার বিনিময়ে গাড়ি নিতে আগ্রহী না হলে রং পরিবর্তন করে বিক্রি করে কিংবা গাড়ির যন্ত্রাংশ খুলে বিক্রি করে দেয়।

র‍্যাবের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, চক্রটির সদস্যদের নামে রাজধানীসহ নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, কুমিল্লা ও গাজীপুরের বিভিন্ন থানায় বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। তারা বিভিন্ন মামলায় আটক হয়ে জেলে গিয়ে একে অপরের সঙ্গে পরিচয়ের মাধ্যমে চক্রের সদস্যের সংখ্যা বাড়ায়। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।

জেইউ/জেডএস