কৃষকের ছেলে পরিচয় দিয়ে নিজের কোনো অবৈধ সম্পদ নেই বলে দাবি করেছেন রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রশাসনিক কর্মকর্তা কাম উপ-সহকারী প্রকৌশলী আতিকুর রহমান খান।

সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গণমাধ্যমের কাছে এমন দাবি করেন তিনি। দুদকের সহকারী পরিচালক মাহবুবুল আলম তাকে বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

আতিক বলেন, আমার বাবা কৃষক, আমি কৃষকের ছেলে। আমার কোনো অবৈধ সম্পদ নেই। যা আছে ডেভেলপার ব্যবসা থেকে অর্জিত। বনশ্রী ও আফতাব নগরে যে বাড়ি সেটা আমার নয়, ডেভেলপার কোম্পানির।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভর্তি বাণিজ্যের যে অভিযোগের কথা বলছেন সেটা আমি করি না। অন্য কেউ করে থাকতে পারে। আমি চুক্তিভিত্তিক চাকরি করি। আমি প্রশাসনিক কর্মকর্তা নই।

গত ৮ আগস্ট আতিকুর রহমান খানের বিরুদ্ধে বিদেশযাত্রার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আদালত। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর গত ৩ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে তা তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়।

আতিকুর রহমান খান ২০০৪ সালে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদে যোগ দেন। ২০১৫ সাল থেকে তিনি প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। এমপিওভুক্ত উচ্চ মাধ্যমিক কলেজে প্রশাসনিক কর্মকর্তার কোনো পদ নেই। অবৈধভাবে এ পদ সৃষ্টি করে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়।

দেশের ১৫টি ব্যাংকে আতিকুর রহমানের ৯৭টি অ‌্যাকাউন্টের তথ্য পাওয়া গেছে। এসব অ‌্যাকাউন্টে ২০০৭ সাল থেকে চলতি বছরের ২৮ মার্চ পর্যন্ত ১১০ কোটি ৬৯ লাখ ৯২ হাজার ৩৯২ টাকা লেনদেন হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে অবৈধ ভর্তিসহ সব বাণিজ্যের হোতা আতিকুর রহমান। তিনটি ক্যাম্পাসের প্রায় ২৭ হাজার শিক্ষার্থীর ড্রেস (পোশাক) তৈরি, ক্যান্টিন, লাইব্রেরি সবই তার নিয়ন্ত্রণে। এমনকি স্কুলের সামনে ফুটপাতে শতাধিক দোকান বসিয়েও তিনি আয় করেন মোটা অংকের টাকা। এছাড়া প্রতিষ্ঠানে যত ধরনের কেনাকাটা, উন্নয়ন ও সংস্কারকাজ হয়, তার সবই করেন আতিক। দরপত্রেও অংশ নেয় নামে-বেনামে তারই প্রতিষ্ঠান। সেখানে চলে বড় ধরনের লুটপাট।

গত ১২ বছরে প্রতিষ্ঠানে পাঁচ শতাধিক শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বেশিরভাগ শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে পাঁচ থেকে ১০ লাখ টাকা এবং কর্মচারী নিয়োগে দুই থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত লেনদেন হয়েছে।

আরএম/এসএসএইচ