করোনা সংক্রমণ কমতে থাকায় স্বাভাবিক ধারায় ফিরেছে রাজধানী ঢাকার জীবন। ৫৪৩ দিন বন্ধ থাকার পর ১২ সেপ্টেম্বর স্কুল-কলেজ খুলে যাওয়ায় সে ধারা পূর্ণাঙ্গ রূপ পেয়েছে। সেই সাথে ফিরে এসেছে করোনাপূর্ববর্তী ঢাকার যানজটের পুরোনো চেহারা।  

করোনায় বন্ধ থাকার পর আগস্টে পুরোদমে গণপরিবহন চালু হওয়ার পর থেকেই ঢাকার সড়কে যানজটের পরিধি বাড়ছিল। আর গেল কয়েকদিনের চিত্রে দেখা যাচ্ছে- কোনো কোনো সময় স্থবির হয়ে পড়ছে রাজধানীর সড়কগুলো। বাকি সময় ধীরগতিতে চলছে যানবাহনগুলো।

আজ (বুধবার) রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা গেছে কোথাও কোথাও অতিরিক্তি যানজট আবার কোনো কোনো সড়কে যানবহনের ধীরগতির সঙ্গে সিগন্যালে গাড়ির দীর্ঘ সারি।

উত্তরা থেকে কুড়িল বিশ্ব রোড হয়ে রামপুরা পর্যন্ত এসেছে এই রুটে চলাচলকারী রাইদা পরিবহনের একটি বাস। বাসটির চালক হাবিবুর রহমান বলেন, স্কুল-কলেজ খোলার পর থেকে তীব্র যানজট হচ্ছে। কোথাও গাড়ি টানা যায় না, যানজটের কারণে খুব ধীরগতিতে গাড়ি চালাতে হয় আমাদের। আসলে শিক্ষার্থীদের স্কুলে পৌঁছে দেওয়ার জন্য অসংখ্য প্রাইভেট কার সড়কে নামে, আগে এমনটা ছিল না। এছাড়া রিকশা চলাচল করা যায় এমন সড়কগুলোতে রিকশার সংখ্যাও বেড়েছে। ফলে এখন প্রতিদিনই রাজধানীর সড়কগুলোতে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।

অন্যদিকে সাভার থেকে গাবতলী, আগারগাঁও, মহাখালী হয়ে গুলশান পর্যন্ত এসেছে বৈশাখী পরিবহনের একটি বাস। বাসটির সহকারী (হেলপার) দেলোয়ার হোসেন বলেন, যানজট এখন নিত্যদিনের ঘটনা রাজধানীর সড়কে। প্রতিদিন এই যানজটের কবলে পড়তে হয় আমাদের। যে কারণে আগের চেয়ে ট্রিপ কমে গেছে, যদিও যাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে। এখন স্কুল কলেজ খোলা থাকায় শিক্ষার্থী,অভিভাবক যাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে। যানজট বেশি হওয়ার কারণ হলো অতিরিক্ত ব্যক্তিগত গাড়ি নেমেছে সড়কে। স্কুল-কলেজ খোলার পর এমন হয়েছে। 
রাজধানীর নতুনবাজার এলাকায় কথা হয় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিজীবী সুলতান আহমেদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ইদানিং কোথাও বের হতে হলে অতিরিক্ত সময় হাতে নিয়ে বের হতে হচ্ছে। কারণ সড়কে এখন নিত্যদিন যানজট থাকছে। কিছুদিন আগেও রাজধানীতে এতটা যানজট হতো না, স্কুল-কলেজ খোলার পর হঠাৎ করেই যানজট বেড়ে গেছে। অতিরিক্ত যানজটের কারণে ফার্মগেট থেকে এ পর্যন্ত রাইড শেয়ারিং মোটরসাইকেলে এলাম, তবুও দীর্ঘ সময় লেগে গেল। আসার পথে প্রতিটা সড়কেই যানজট আর যানবাহনগুলোর ধীরগতি দেখেছি।

করোনার সর্বশেষ পরিস্থিতি 
গতকাল মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদফতর করোনায় ৩৫ জনের মৃত্যুর কথা জানায়। একইসঙ্গে ২ হাজার ৭৪ জনের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার কথা জানানো হয়। তার আগে সোমবার ৪১, রোববার ৫১, শনিবার ৪৮, শুক্রবার ৩৮, বৃহস্পতিবার ৫৮ ও বুধবার ৫২ জনের মৃত্যু হয়।

এএসএস/এনএফ