চট্টগ্রামে ওসি পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রোববার (১৯ সেপ্টেম্বর) নগরীর বাকলিয়া এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।  

ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন।  

গ্রেফতার তিনজন হলেন- মো. আজিম হোসেন ইমন (২৭), মো. আরিফ হোসেন (৩০) ও মো. তারেক (২২)।
 
পুলিশ কর্মকর্তা নেজাম উদ্দিন বলেন, আসামিরা কখনও রিকশাচালক, কখনও দিনমজুর হিসেবে কাজ করে। তবে তারা বিভিন্ন সময়ে ভিকটিম বা সেবাপ্রার্থী সেজে বিভিন্ন থানায় গিয়ে থানার ওসি, পরিদর্শক তদন্ত ও অফিসারদের নাম সংগ্রহ করে। নাম সংগ্রহ করার পরে তারা থানায় সংঘটিত বিভিন্ন ঘটনা সম্পর্কে খোঁজ খবর নেয়। খোঁজখবর নিয়ে তাৎক্ষণিক ওই ঘটনার দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারের নাম ব্যবহার করে মামলার বাদী, আসামিদের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করে। 

এছাড়া কখনও থানার ওসি পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করে। এতে কেউ কেউ টাকা দেয় আবার কেউ মোবাইল বন্ধ করে দেয়। 

ওসি বলেন, গ্রেফতার আরিফ বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে আজিম হোসেনকে দেয়। আর আজিম হোসেন বিভিন্ন ব্যবসায়ীদেরকে ফোন দিয়ে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে তারেকের নগদ/বিকাশ অ্যাকাউন্ট নম্বরে টাকা আনে। পরে যে টাকা পায় তা তারা ভাগ করে নেয়। 

সাম্প্রতিক সময়ে তারা সমীর চৌধুরী নামক এক ব্যক্তিকে ভুয়া একটি মামলার রেফারেন্স দিয়ে কোতোয়ালী থানায় আসতে বলে ও ৫ হাজার টাকা খরচ পাঠাতে বলে। 

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ সেপ্টেম্বর আসামি আজিম হোসেন আসাদগঞ্জের একজন ব্যবসায়ীর কাছে ফোন করে কোতোয়ালী থানার ওসি বলে পরিচয় দেয় নিজেকে। কথা বলার একপর্যায়ে ঐ ব্যবসায়ীকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিতে থাকে। কোতোয়ালী থানা এলাকায় ব্যবসা করতে চাইলে আজিম হোসেনকে দুই লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে বলে জানায়। অন্যথায় ব্যবসা করতে দেবে না বলেও হুমদি দেয়। পরেও একইভাবে হুমকি দিতে থাকে। ওই ব্যবসায়ী টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে কোতোয়ালী থানার ওসি পরিচয় দানকারী আজিম হোসেন ব্যবসায়ী মো. লুৎফর রহমানকে (৪২) অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ একটি নগদ নম্বরে টাকা পাঠানোর কথা বলে। অন্যথায় মেরে ফেলার হুমকিও দেয়।

একপর্যায়ে তিনি আজিমের দেওয়া বিকাশ নম্বরে ১৫০০ টাকা পাঠান। এরপর আবার টাকা চাইলে ব্যবসায়ী ১৬ সেপ্টেম্বর পুলিশকে ঘটনাটি অবহিত করেন। পরে পুলিশ নাম্বারটি চিহ্নিত করে আজিম হোসেনকে আজ ভোরে বাকলিয়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাকি দুই জনকেও বাকলিয়া থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
 
পুলিশ জানিয়েছে, আজিম হোসেন অপর দুই জনের সহযোগিতায় কোতোয়ালী, পাঁচলাইশ ও পতেঙ্গা থানার এসআই মিজান পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ভয়ভীতি প্রদর্শন করে চাঁদা দাবি করেছে। তাদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

কেএম/জেডএস