প্রতীকী ছবি।

সরকারি কর্মচারীদের বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন (প্রতিবন্ধী) সন্তানদের জন্য প্রাথমিকভাবে রাজধানী ঢাকায় ভাড়া বাড়িতে দিবাযত্ন কেন্দ্র চালু করবে বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড। আগামী ২ থেকে ৩ মাসের মধ্যে এ দিবাযত্ন কেন্দ্র চালু করা হবে। পরবর্তীতে গাজীপুরে স্থায়ী দিবাযত্ন কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। 

জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১৭ জানুয়ারি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেসময় তিনি সরকারি কর্মচারীদের প্রতিবন্ধী সন্তানদের পুনর্বাসনের জন্য সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব উপস্থাপনের জন্য নির্দেশনা দেন। 

তার নির্দেশনা অনুযায়ী প্রাথমিক পর্যায়ে ঢাকা মহানগরে কর্মরত বা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীর সন্তানদের জন্য একটি দিবাযত্ন কেন্দ্র চালু করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এজন্য প্রতিবন্ধী সন্তানদের তথ্য চেয়েছে বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড। 

গত ১৪ সেপ্টেম্বর সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠায় বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড। 

চিঠিতে বলা হয়, ২০১৯ সালের ১৭ জানুয়ারি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তিনি সরকারি কর্মচারীদের বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন (প্রতিবন্ধী) সন্তানদের পুনর্বাসনের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব উপস্থাপনের নির্দেশনা দেন। এরই ধারাবাহিকতায় ঢাকা মহানগরে কর্মরত বা অবসরপ্রাপ্ত সকল সরকারি কর্মচারীর বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন সন্তানদের কিংবা তাদের ওপর নির্ভরশীলদের জন্য একটি জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

এতে আরও বলা হয়, প্রাথমিক পর্যায়ে এসব সন্তানদের জন্য ঢাকা মহানগরে একটি দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপন করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে নির্ধারিত ফরম মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর (যার জন্য প্রযোজ্য) মাধ্যমে পূরণ করা ফরম ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ই-মেইলে পাঠানোর নির্দেশনা প্রদানের জন্য অনুরোধ করা হলো। 

এ বিষয়ে বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক (সচিব) ড. নাহিদ রশীদ ঢাকা পোস্টকে জানান, প্রাথমিকভাবে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে অস্থায়ীভাবে এ দিবাযত্ন কেন্দ্র করা হবে। তবে ঠিক কোথায় হবে, তা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। 

তিনি বলেন, আমরা বাড়ি খুঁজছি। একটু তাড়াতাড়ি করতে হবে। গাজীপুরে আমাদের স্থায়ী একটি সেন্টার করার চিন্তা-ভাবনা করা আছে। সেটা করতে সময় লাগবে। কারণ, একটি জায়গা অধিগ্রহণ করা, সেখানে বানানো অনেক সময়ের ব্যাপার। সেজন্য আমরা আপাতত অস্থায়ী ভিত্তিতে এটা করতে চাচ্ছি।

ড. নাহিদ রশীদ বলেন, আমরা এটা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করলাম। কমিটি হয়েছে। বাড়ি খুঁজতে পরবর্তী সপ্তাহে যাব। আমাদের মেইন কাজটি হলো বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে তথ্য নিতে হবে যে, কতজনের বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন সন্তান আছে। 

এদিকে, বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের চিঠি অনুযায়ী নিজেদের কর্মচারীদের ফরম পূরণ করে পাঠানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ। এরমধ্যে গত ১৬ সেপ্টেম্বর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং ২১ সেপ্টেম্বর ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। 

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব মো. সাজজাদুল হাসান জানান, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কাছে এ চিঠি পাঠানো হয়েছে।  

আর ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় বলা হয়, সংশ্লিষ্ট কর্মচারী (যার জন্য প্রযোজ্য) নির্ধারিত ছক পূরণ করে ই-মেইলে পাঠানোর জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো। 

বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক বলেন, আমরা ৩০ জনের বেশি হয়তো এ মুহূর্তে পারব না। সেজন্য ছোট গ্রুপ ম্যানেজ করব। আর কত জন আছে, সেই সংখ্যা আমরা জানি না। প্রথমে এই সংখ্যা জানব। এরমধ্য থেকে আমরা ২৫ থেকে ৩০ জন নেব, তবে এটা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

কবে নাগাদ দিবাযত্ন কেন্দ্র চালু করা যাবে- জানতে চাইলে কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের এ মহাপরিচালক বলেন, প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আশা করছি তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে একটি দৃশ্যমান অগ্রগতি হবে। 

তিনি আরও বলেন, একটা বাড়ি খুঁজলে আপনি পাবেনই। কিন্তু ছেলেমেয়েগুলোকে তো যোগার করতে হবে। ওটা হলো মোস্ট চ্যালেঞ্জিং। বাবা-মা সন্তানদের দেবেন কি না, সেটাও একটি বিষয়। তবে আমরা শুরু করেছি, আশা করছি অল্প সময়ের মধ্যেই হবে। 

এসএইচআর/এইচকে