প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে দেশব্যাপী ৭৫ লাখ মানুষকে করোনাভাইরাসের টিকা দিতে সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম।

মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টম্বর) সকাল ৯টা থেকে ৪ হাজার ৬০০ ইউনিয়ন, এক হাজার ৫৪টি পৌরসভা, সিটি করপোরেশনের ৪৪৩টি ওয়ার্ডে নির্ধারিত কেন্দ্রে একযোগে টিকাদান চলবে। ২৫ বছরের বেশি বয়সী যারা আগেই টিকার জন্য নিবন্ধন করেছিলেন, তাদের মধ্যে থেকে ৭৫ লাখ মানুষকে টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হবে।

ইতোমধ্যে তাদের মোবাইলে এসএমএস পাঠিয়ে কেন্দ্র জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত কেন্দ্রগুলোতে টিকা ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামও পৌঁছে গেছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যের ডিজি।

খুরশীদ আলম বলেন, এ ক্ষেত্রে যাদের বয়স ৪০ বছরের বেশি তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। বয়স্ক, শারীরিক প্রতিবন্ধীদের বিশেষ বিবেচনায় আনব। তবে স্তন্যদানকারী মা ও গর্ভবতীদের আনা যাবে না। টিকা নেওয়ার সময় জাতীয় পরিচয়পত্র ও টিকা কার্ড সঙ্গে আনতে হবে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিনকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী টিকা ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ব্যাপক হারে টিকা প্রদানের কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। এই ক্যাম্পেইনের শুধুমাত্র প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া হবে। একইভাবে আগামী মাসের একই তারিখে দ্বিতীয় ডোজের টিকাদান শুরু হবে। সকাল ৯টা থেকে শুরু হওয়া এ কার্যক্রম লক্ষ্যমাত্রা ৭৫ লাখে পৌঁছানো পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। টিকাদানের পর আমাদের ভ্যাক্সিনেশন টিম কেন্দ্রে এক ঘণ্টা অবস্থান করবে।

তিনি আরও বলেন, উপজেলা পর্যায়ের প্রতিটি ইউনিয়নে তিনটি বুথ থাকবে। পৌরসভায় ওয়ার্ড প্রতি একটি বুথ ও সিটি করপোরেশনের প্রতিটি ওয়ার্ডে তিনটি বুথের মাধ্যমে টিকা দেওয়া হবে। আগে থেকে যেসব কেন্দ্রগুলোয় টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা ছিল, সেগুলোতে টিকাদান অব্যাহত থাকবে। টিকা নিতে অপেক্ষারত বয়স্কদের জন্য বসার ব্যবস্থা করতে হবে। টিকা দেওয়ার পরে প্রত্যেকে নির্দিষ্ট স্থানে কমপক্ষে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করবেন। কেন্দ্রগুলোতে নারীদের জন্য পর্দাসম্বলিত আলাদা টিকার জায়গার ব্যবস্থা করা হবে।

স্বাস্থ্যের ডিজি বলেন, দেশে যখন করোনা মহামারি শুরু হলো এবং যখন পৃথিবীতে সর্বপ্রথম টিকার অনুমোদন দেওয়া হলো, তখন থেকেই প্রধানমন্ত্রী আমাদের টিকা সংগ্রহের জন্য অনুমতি দিয়ে রেখেছেন। একমাত্র তার কারণেই আমরা সবার আগেই পর্যাপ্ত টিকার ব্যবস্থা করতে পেরেছি।

ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রতিটি কেন্দ্রে ১৫শ, পৌরসভার কেন্দ্রে ৫০০ এবং সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ডগুলোতে এক হাজারের বেশি মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে।

এ কার্যক্রমে অংশ নেবেন ৩২ হাজার ১০৬ জন স্বাস্থ্যকর্মী। পাশাপাশি ৪৮ হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবী টিকাদান কর্মসূচিতে সহায়তা করবেন।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, রোববার পর্যন্ত ৪ কোটি ৪৭ লাখের বেশি মানুষ সুরক্ষা প্ল্যাটফর্মে কোভিড টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন। তাদের মধ্যে ২ কোটি ৪৮ লাখের  বেশি মানুষ টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন। দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ১ কোটি ৬৪ লাখের বেশি মানুষ।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের টিকাদান শুরু হলেও সরবরাহ সঙ্কটে মাঝে কিছুদিন এ কর্মসূচি থমকে যায়। পর নতুন চালান এলে টিকাদানেও গতি আসে। ওই সময় ৭ অগাস্ট থেকে ছয় দিনের গণটিকাদান কর্মসূচির আওতায় ৫০ লাখের বেশি মানুষকে টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছিল। কর্মসূটির প্রথম দিনই টিকা পেয়েছিলেন প্রায় ৩০ লাখ লোক। এক দিনে ৭৫ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়ার চেষ্টা এর আগে আর দেশে হয়নি।

ওএফ