নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে অগ্নিকাণ্ডে নিহত আরও একজনের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গ থেকে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তার নাম ইসমাইল হোসেন মহিউদ্দিন (১৮)।

বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় নিহতের পিতা ইউসুফের কাছে তার মরদেহ হস্তান্তর করেছে নারায়ণগঞ্জ সিআইডি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ সিআইডির পরিদর্শক মো. আতাউর রহমান বলেন, এর আগে আমরা ৪৮ জনের নমুনা সংগ্রহ করেছিলাম। তাদের মধ্য থেকে দুই দফায় ৪৫ জনের মরদেহের ডিএনএ মিল থাকায় পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আজ আরও একজনের মরদেহ হস্তান্তর করা হলো। এ নিয়ে ৪৬ জনের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। তার বাড়ী নোয়াখালী জেলার হাতিয়া থানার মাছিরপুর গ্রামে।

নিহতের বাবা ইউসুফ জানান, কী বলব, কিছুই বলার নেই। ছেলের লাশ নিয়ে গ্রামে যাচ্ছি। পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় বোঝা বাবার কাঁধে সন্তানের লাশ।

প্রথম দফায় ৪ আগস্ট ২৪ জনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তারা হলেন- মো. আয়াত হোসেন, মো. নাঈম ইসলাম, নুসরাত জাহান টুকটুকি, হিমা আক্তার, মোসা. সাগরিকা শায়লা, খাদেজা আক্তার, মোহাম্মদ আলী, তাকিয়া আক্তার, মোসা. শাহানা আক্তার, মোসা. মিতু আক্তার, জাহানারা, মোসা.ফারজানা, মোসা. ফাতেমা আক্তার, মোসা. নাজমা খাতুন, ইসরাত জাহান তুলি, মোসা. নাজমা বেগম, রাশেদ, মো. রাকিব হোসেন, ফিরোজা, মো. তারেক জিয়া, মো. রিপন মিয়া, মোসা. শাহানা আক্তার, মো. মুন্না ও রিয়া আক্তার।

দ্বিতীয় দফায় ৭ আগস্ট ২১ জনের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। তারা হলেন- মাহমুদা আক্তার, মোছা. সান্তা মনি, মাহবুবুর রহমান, জিহাদ রানা, রহিমা আক্তার, মিনা খাতুন, মো. নোমান, আমেনা আক্তার, মোছা. রাবেয়া আক্তার, মো. রহিম, মো. আকাশ মিয়া, নাজমুল হোসেন, কম্পা রানী বর্মন, স্বপন মিয়া, শেফালী রাণি সরকার, আমৃতা বেগম, মো. শামীম, মোছা. সেলিনা আক্তার, মোছা. তাসলিমা আক্তার, মোছা. ফাকিমা ও মো. হাসনাইন।

গত ৮ জুলাই রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠানের হাসেম ফুডস ফ্যাক্টরিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সেখানে পুড়ে মারা যান ৪৮ জন। ৯ জুলাই রাতে তাদের ময়নাতদন্ত শেষ হয়। ১০ জুলাই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নাজিম উদ্দিন। পরে মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি।

ওই মামলায় পুলিশ সজীব গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল হাসেম, হাসীব বিন হাসেম, তারেক ইব্রাহীম, তাওসীব ইব্রাহীম, তানজীম ইব্রাহীম, সিইও শাহেন শান আজাদ, উপ-মহাব্যবস্থাপক মামুনুর রশিদ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ার ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা সালাউদ্দিনকে গ্রেফতার করে।

তাদের চার দিন করে রিমান্ডে নেওয়া হয়। এরইমধ্যে ১৪ জুলাই চেয়ারম্যান হাসেমসহ দুই ছেলে তাওসীব ইব্রাহীম ও তানজীম ইব্রাহীম আদালত থেকে জামিন পান। আর বাকি ছয় জনকে কারাগারে পাঠানো হয়।

এসএএ/ওএফ