বছর জুড়েই বাজারে ইলিশ বিক্রি করেন শহিদুল ইসলাম নাম। বাড্ডা বাজারের এ ইলিশ বিক্রেতা আজ রুই, কাতল আর শিং মাছ বিক্রি করছেন।

শহিদুল ইসলাম বলেন, আজ থেকে ইলিশ ধরা, বিক্রি ও কেনা ২২ দিনের জন্য বন্ধ। আমি ক্রেতাদের কাছে ইলিশ বিক্রেতা হিসেবেই পরিচিত। আজও অনেক ক্রেতা এসে আমার কাছে ইলিশ খুঁজেছে। কেউ কেউ এখনও জানে না যে আজ থেকে ইলিশ বিক্রি বন্ধ। যেহেতু বেশিরভাগ ক্রেতাই আমার পরিচিত, তারা এসে আমাকে জিজ্ঞেস করছে, ভাই ইলিশ পাওয়া যাবে না। উত্তরে আমি বলছি, বন্ধ থাকা অবস্থায় যদি ইলিশ বিক্রি করি তাহলে আপনি আমি দুজনকেই জরিমানা খেতে হবে।

সোমবার (৪ অক্টোবর) সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে ইলিশ দেখা যায়নি। তবে ইলিশ বিক্রি বন্ধের কারণে অন্য মাছ বিক্রি আজ তুলনামূলক বেড়েছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।

মা ইলিশের প্রজনন নিরাপদ রাখার লক্ষ্যে আজ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন সারাদেশে ইলিশ ধরা বন্ধ থাকবে। এ সময় ইলিশ বিক্রি, বিপণন, পরিবহন করা যাবে না। ইলিশ ক্রয়-বিক্রয় করলে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়কেই জরিমানা গুনতে হবে। যে কারণে কোনো বাজারে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে না।

গুলশান সংলগ্ন লেকপাড় বড় মাছ বাজারের ইলিশ বিক্রেতা নাঈম আহমেদ বলেন, গত সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত সপ্তাহের সর্বোচ্চ ইলিশ বিক্রি করেছি। যেহেতু আজ থেকে ইলিশ বিক্রি বন্ধ, তাই অন্য মাছ বিক্রি শুরু করেছি। অনেক সচেতন ক্রেতাই গতকাল (রোববার) ইলিশ কিনেছে এক একজন চার-ছয়টা বা তার বেশি করে। কিন্তু আজ থেকে সবাই ইলিশ বিক্রি বন্ধ রেখেছে। যেসব বিক্রেতার ইলিশ অবশিষ্ট ছিল তারা ফ্রিজে রেখে দিয়েছে। নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর তারা সেই ইলিশ বিক্রি করবে। বিক্রি বন্ধের তথ্য যারা জানে না তাদের অনেকে আজও বাজারে এসে ইলিশ খুঁজছে কিন্তু আমরা বিক্রি করে বিপদে পড়তে চাই না। তাই পুরোদমে ইলিশ বিক্রি বন্ধ রেখেছি।

একই বাজারে অন্য মাছ কেনার পর ইলিশ খুঁজছিলেন শাকিল আহমেদ নামের একজন ক্রেতা। তিনি বলেন, আজ থেকে যে ইলিশ কেনা, বিক্রি বন্ধ সেটা আমার জানা ছিল না। তাই বাজারে এসে পরিচিত বিক্রেতার কাছে ইলিশ খুঁজতেই তিনি জানালেন আজ থেকে বন্ধ, আবার ২২ দিন পর পাওয়া যাবে। তাই অন্য মাছ কিনে বাসায় ফিরছি।

উত্তর বাড্ডা বাজারের ইলিশ বিক্রেতা হামিদুর রহমান জানান, আজ থেকে ইলিশ বিক্রি বন্ধ তাই গতকাল সর্বোচ্চ সংখ্যক ইলিশ বিক্রি করেছি। ক্রেতারা গতকাল বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত অনেক ইলিশ কিনেছে। গতকাল আধা কেজি ওজনের ইলিশ ৬০০ টাকা থেকে বিক্রি হয়েছে। আর ৭০০/৮০০ গ্রামের ইলিশ ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা, এক কেজি ওজনের ইলিশ ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি চাহিদা ছিল ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের। আজ ইলিশ বিক্রি বন্ধ তবু অনেকে না জেনে এসে ইলিশ খুঁজছে।

এদিকে বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ইলিশ মাছ বিক্রি বন্ধ থাকায় আগের দিনের তুলনায় অন্য মাছ বিক্রি বেড়েছে। বাজারে রুই মাছ ২৮০ থেকে ৩২০ টাকা, কাতল মাছ ২৭০ থেকে ৩০০ টাকা, কই ২০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৬০ টাকা, শিং মাছ ৪৫০ থেকে ৬৫০ টাকা, পাঙ্গাশ ১৫০ টাকা, চিংড়ি ৫৫০ টাকা, পাবদা ৩৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

এএসএস/এসএসএইচ