মন্ত্রিসভার বৈঠক

স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) (সংশোধন) আইন, ২০২১ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। খসড়া আইনে টানা এক বছর বেতন-ভাতা বকেয়া রাখলে পৌরসভা বাতিলের বিধান রাখা হয়েছে। 

সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ আইনের অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে বৈঠকে যোগ দেন তিনি। সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা বৈঠকে অংশ নেন।

বৈঠক শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া কোনো পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতাদি একসঙ্গে ১২ মাস বকেয়া থাকলে ওই পৌরসভা বাতিল করা যাবে। বর্তমানে ৮০ শতাংশ পৌরসভা বেতন-ভাতা দিতে পারছে। সমস্যাটি এখন অনেক কমে এসেছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, খসড়া আইনে মেয়রের পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষে নির্বাচন না হলে পৌরসভায় প্রশাসক নিয়োগ দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। পৌরসভায় প্রশাসক নিয়োগ দেওয়ার ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে। 

এছাড়া পৌরসভার ‘সচিব’ এর নাম পরিবর্তন করে ‘পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা’ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। 

খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ২০০৯ সালের পৌরসভা আইনে একটি অপূর্ণতা ছিল। এটি কেউ খেয়াল করেনি। নির্বাচিত পৌরসভার সময়সীমা ছিল পাঁচ বছর। সেখানে একটি বিধান ছিল যে, পাঁচ বছর পেরোলেও পরবর্তী পৌরসভার নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত ওই মেয়র কন্টিনিউ করবেন। এতে দেখা গেল, অনেক জায়গাতে পাঁচ বছরের পরে বিভিন্ন ইস্যুতে মেয়ররা মামলা-মোকাদ্দমা করে ১২ থেকে ১৬ বছর পর্যন্ত পদে থেকে যাচ্ছেন। 

তিনি বলেন, যেহেতু আইনে কোনো কিছু ক্লিয়ার (স্পষ্ট) ছিল না, সেজন্য কিছু করা যাচ্ছিল না। দোহারে মনে হয় ১৫ বছর ধরে মেয়র আছেন। কিছুই করা যাচ্ছিল না। হাইকোর্ট থেকেও তাদের পক্ষে রায় ছিল। বেশ কিছুদিন থেকে মন্ত্রিসভায় এটি নিয়ে আলোচনাও হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী এর আগে একাধিকবার নির্দেশনা দিয়েছিলেন। আজকে এ আইনের মধ্যে ওই বিধান সংশোধন করে দেওয়া হয়েছে। পাঁচ বছর যখন শেষ হয়ে যাবে তখন মেয়র ও তার কাউন্সিল বাতিল হয়ে যাবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সেক্ষেত্রে (বাতিলের পর) সরকার যদি প্রশাসনিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কোনো কর্মকর্তাকে যোগ্য মনে করে, তবে ছয় মাসের জন্য প্রশাসক নিয়োগ দিতে পারবে। ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। এ বিধানও পৌরসভা আইনে ছিল না। এখন পরিষ্কার হয়ে গেল, পৌরসভায় পাঁচ বছরের বেশি কেউ (মেয়র ও কাউন্সিলর) থাকতে পারবে না।

আগে পৌরসভা করার জন্য প্রতি কিলোমিটারে দেড় হাজার লোক থাকার একটা শর্ত ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেই সংখ্যা দুই হাজার করে দেওয়া হয়েছে। এতে ট্যাক্স কালেকশন বাড়বে, কাজকর্ম বেশি হবে।

এসএইচআর/আরএইচ