জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন

করোনাকালে দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকায় সৃষ্টি হয়েছে নিয়োগ পরীক্ষার জট। এ কারণে একইদিন এমনকি একই সময়ে একাধিক নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে চাকরিপ্রার্থীদের। তবে এই নিয়োগ পরীক্ষার জট কিছুদিনের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।

বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘করোনার কারণে পৌনে দুই বছরের ব্যাকলক রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে শূন্যপদগুলো আমাদের দ্রুত ফিলাপ করতে হবে। সেজন্য এই রকম অবস্থা কিছুটা হচ্ছে। আমার মনে হয়, আর কিছুদিনের মধ্যে এটা ঠিক হয়ে যাবে।’

করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির পর বর্তমানে একটি স্বস্তিকর পরিস্থিতি আসছে উল্লেখ করে ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘আমরা এখন এই স্বস্তিকর সময়ের মধ্যে পরীক্ষাগুলো নেওয়ার চেষ্টা করছি।’

তিনি বলেন, ‘সব পরীক্ষা ডিউ ছিল। যেহেতু শুক্র ও শনিবার বন্ধ থাকে, তাই পরীক্ষাগুলো এই দিনগুলোতে নিতে হয়। কারণ যেসব ডিপার্টমেন্ট পরীক্ষা নেয়, তারা সেভাবে আয়োজন করে থাকে।’

‘পিএসসি বলছে তারা শুক্র ও শনিবার ছাড়া অন্যদিন করতে পারবে। কিন্তু অন্যান্য সংস্থাগুলো করতে পারবে না। তারপরও আমরা তাদের অনুরোধ জানাব।’

নিয়োগ পরীক্ষায় সমন্বয়হীনতার জন্য এ সময় বোর্ড বা ফোরাম না থাকাকেই দায়ী করেন ফরহাদ হোসেন। 

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যদি একটা বোর্ড থাকত বা একটা ফোরাম থাকত, যেখান থেকে পরীক্ষা হয়, তেমন কোনো ফোরাম নেই। তাই সমন্বয়টি করা হবে কীভাবে? আমাদের ভবিষ্যতে চিন্তাভাবনা আছে- পিএসসিকে আরও সম্প্রসারণ করে আরেকটি ইউনিট করে তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির ওটা (নিয়োগ প্রক্রিয়া) করা যায় কিনা, এটা নিয়ে আমরা চিন্তাভাবনা করছি।’

তিনি বলেন, আগেও আমাদের এই রকম পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। অতীতেও যারা শুক্র ও শনিবার পরীক্ষা দিয়েছেন, তাদের এমন পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়েছে। 

বিশেষ পরিস্থিতির মধ্যে সমন্বয়ের জায়গা নেই বলেও মন্তব্য করেন ফরহাদ হোসেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘একটা বোর্ড এই পরীক্ষা নিচ্ছে না। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থা তাদের মতো করে করছে। আমরা সবাইকে এ বিষয়ে জানাতে পারি। তবে তারা যে খুঁজে বের (কোন দফতরের কবে পরীক্ষা) করবে সেটাও তো কঠিন কাজ। আগে থেকে তো বিজ্ঞাপনগুলো আসছে না। হঠাৎ করে বিজ্ঞাপন আসে।’

তিনি বলেন, ‘দেখি আমরা, কী করা যায়। তাহলে অন্যদিনে পরীক্ষা নিতে হবে। অন্যদিনে পরীক্ষা নিতে তো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকতে হবে, শিক্ষকদের ফ্রি থাকতে হবে। অনেকগুলো প্রশ্ন আছে।’

চাকরি প্রার্থীদের আপাতত কিছুদিনের মধ্যে একটা ছাড় দিয়ে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে।’

উল্লেখ্য, রাজধানীতে গত ১৭ সেপ্টেম্বর সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ২১টি নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ গত শুক্রবার (৮ অক্টোবর) সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত মিলিয়ে নিয়োগ পরীক্ষা ছিল ১৪টি। এর মধ্যে অন্তত ৬ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় একই সময়ে।

এদিকে একই দিনে এবং একই সময়ে একাধিক পরীক্ষার আয়োজন করায় ক্ষতির সম্মুখীন হন অনেক চাকরি প্রত্যাশী। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।

এসএইচআর/এমএইচএস