মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি বলেছেন, আলোচনা-সেমিনারে গেলেই বাল্য বিয়ে নিয়ে কথা শুনি। এটা নিয়ে আমরা বিব্রত হচ্ছি। কিশোরীর বাল্য বিয়ের বিষয়টি মিডিয়া তুলে আনছে। কিন্তু এখন ভিন্নভাবে চিন্তা করা দরকার। কতো শতাংশ পুরুষ এখন কিশোরীকে বিয়ে করছেন? কিশোরী বিয়ের ক্ষেত্রে এত উৎসাহ কেন? যেসব বিষয়ও এখন জানা জরুরি।

আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু দিবস উপলক্ষে ‘কিশোরী-কিশোরদের আত্ম-উন্নয়নে ইতিবাচক পরিবেশের ভূমিকা’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

সোমবার (১১ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে (শেরাটন) আয়োজিত ও গোলটেবিল বৈঠকে চিলড্রেন অ্যাফেয়ার্স জার্নালিস্ট নেটওয়ার্কের আহ্বায়ক মাহফুজা জেসমিনের সভাপতিত্বে মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, বাল্য বিয়ে কিশোরী-তরুণীদের সামনে চলার পথকে প্রতিনিয়ত রুদ্ধ করছে। বাল্য বিয়ের সংখ্যা, কারণ নিয়ে প্রতিবেদন হয়। বাল্যবিবাহ শিশু-কিশোরীদের আত্ম উন্নয়নে বাধা। কিন্তু বিদেশ থেকে এসে দেখে দেখে সুন্দরী কিশোরীদের যারা বিয়ে করছেন তাদের নিয়ে এখন রিপোর্ট হওয়া দরকার।

সাবেক এ প্রতিমন্ত্রী বলেন, যে বয়সে বাল্য বিয়ে হচ্ছে সেই বয়সটা খুবই খারাপ। খুবই বিব্রতকর একটা বয়স আমরাও পেরিয়ে এসেছি। বাংলাদেশে খুব কমই এড্রেস করা হচ্ছে। আমরা কেন বাংলাদেশে বাল্য বিয়ে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না। এটা আলোচনায় আনা উচিত।

চুমকি বলেন, অনেক অভিভাবক আমাদের কাছে আসছেন, অভিযোগ করছেন যে, তার মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে। কিন্তু আদতে দেখা যায়, গ্রামের সেই মেয়ে নিজে থেকে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছে। এ রকম অনেক মেয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। এখানে আমাদের অভিভাবকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে, সতর্ক হতে হবে৷ বাল্য বিয়ে যারা দিচ্ছে না, যেসব পরিবারে ১৫-১৮ বছর বয়সী কিশোর-তরুণী আছে, এমন হতদরিদ্র পরিবারকে প্রণোদনা দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। বাল্য বিবাহ বন্ধে পুরস্কার, বাল্য বিবাহে তিরস্কারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, সামাজিক সব সমস্যার সমাধান সরকার করতে পারে না। সবার সহযোগিতার দরকার পড়ে। পার্লামেন্টে আমাদের কমিটি আছে। বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা করছি। ইতোমধ্যে কন্যা শিশুদের মধ্যে জাগরণ শুরু হয়েছে৷

গোলটেবিল আলোচনা সভায় দৈনিক যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম বলেন, আমাদের আগামীর ভবিষ্যৎ কিশোরী- তরুণ তরুণীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের জায়গা অটুট রাখতে হবে। আশাহত হলে চলবে না।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম বলেন, আমরা যারা অভিভাবক তাদের উচিত শিশু-কিশোরদের আত্মবিশ্বাসী হিসেবে গড়ে তোলা। কারণ ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতার যুদ্ধসহ সব ধরনের সংগ্রাম-লড়াইয়ে কিশোর-তরুণদের ভূমিকা ছিল অনন্য। কিশোরী-কিশোরদের মধ্যে স্পৃহা, তারুণ্য এগিয়ে নিতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেডের (ইউবিএল) নতুন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) জাভেদ আখতার বলেন, আমাদের সামাজিক কিছু চ্যালেঞ্জ আছে। ৫৭ বছর ধরে ইউনিলিভার বাংলাদেশে কাজ করছে। অনেকে ভাবেন আমরা শুধু সাবান বিক্রি করি, তবে আমরা শুধু পণ্য বাজারজাতই করি না, সবার সঙ্গে কাজ করতে পারি, আমরাও কিছু পরিবর্তনে কাজ করতে চাই।

জেইউ/এসকেডি