রেকর্ড পরিমাণে খাদ্যশস্য উৎপাদনের পরও বাজারে খাদ্য ঘাটতি এবং দাম নিয়ন্ত্রণে না থাকার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। এ বিষয়ে একাধিক যুক্তি তুলে ধরেন তিনি।

শুক্রবার বিশ্ব খাদ্য দিবস ২০২১ উদযাপন উপলক্ষে রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের মিলনায়তনে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে খাদ্য ঘাটতি ও দাম নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন তিনি।

ব্রিফিংয়ের শুরুতে কৃষিমন্ত্রী লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন। এতে তিনি জানান, ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বোরো ধান উৎপাদন হয়েছে।

রেকর্ড পরিমাণ খাদ্যশস্য উৎপাদনের পরও খাদ্য ঘাটতি ও দাম নিয়ন্ত্রণে আসছে না কেন- জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমরা চাল উৎপাদনে চতুর্থ ছিলাম, ইন্দোনেশিয়াকে ছাড়িয়ে এখন তৃতীয় স্থানে এসেছি। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, তারপরও খাদ্য ঘাটতি থাকছে এবং বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না। 

তিনি বলেন, ইকোনোমিকসে প্রাইমারি বা বেসিক হলো ডিমান্ড অ্যান্ড সাপ্লাই। যদি ডিমান্ড বেশি হয় এবং সাপ্লাই যদি কম হয়, দাম কিছুটা বাড়বেই। আমরা সিন্ডিকেট বলি আর যাই বলি না কেন, দাম বাড়বেই। আমরা চেষ্টা করি বাজারকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য।  

খাদ্যের দাম বৃদ্ধি ও ঘাটতির অন্যতম কারণ হিসেবে নন হিউম্যান কনজাম্পশানের কথা উল্লেখ করেন কৃষিমন্ত্রী। তিনি জানান, কাবিখাসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে ১০টাকা কেজির চাল দেওয়া হয়। সেটা কিন্তু অনেকেই বিক্রি করে দেন। ১০ টাকা কেজি দরে চাল দেওয়ার সময় পাশেই পাইকাররা বসে থাকেন। চাল নিয়ে পাইকারদের কাছে বিক্রি করেন তাদের অনেকে।

ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, পোলট্রি , মাছ, ডেইরি, প্রাণির খাদ্য উৎপাদনেও একটা বড় অংশ খাদ্যশস্য হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।  নন হিউম্যান কনজাম্পশনে কত পরিমাণ খাদ্যশস্য ব্যবহার হচ্ছে তা পরিসংখ্যানে আনা হয় না। এটি একটি অন্যতম কারণ।

পরিসংখ্যানের ঘাটতির বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, পরিসংখ্যান ব্যুরোর সঙ্গে আমাদের কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্যের কিছুটা সমস্যা হয়েছে, এটিও একটি কারণ। 

পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, পেঁয়াজে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে এক বছরেই কৃষি মন্ত্রণালয় সাত লাখ টন উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পেরেছে। এ বছর ৩৩ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে। করোনাকালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলে বিশ্বে বাংলাদেশ পেঁয়াজ উৎপাদনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে।

কৃষি মন্ত্রণালয় ও জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) আয়োজনে এ অনুষ্ঠিত এ প্রেস ব্রিফিংয়ে সভাপতিত্ব করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন এফএওর বাংলাদেশ প্রতিনিধি রবার্ট ডি. সিম্পসনসহ অনেকে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, ১৬ অক্টোবর রাজধানীতে বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষে নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয় ও জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) যৌথভাবে নানা কর্মসূচি পালন করবে। দিবসটি উপলক্ষে আয়োজন করা হয়েছে আন্তর্জাতিক সেমিনার। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন তিনি।

একে/ আরএইচ