আশ্বিনের বিদায় ঘণ্টা বাজিয়ে রোববার থেকে শুরু হচ্ছে কার্তিক মাস। তবুও কোথাও শীতের পরশ নেই। আকাশ মেঘলা থাকলেও অঝোরে নামে না বৃষ্টি। কাঠফাটা রোদ না থাকলেও ভ্যাপসা গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত। কোথাও কোথাও বয়ে যাচ্ছে দাবদাহ। 

হেমন্তের শুরুতে আগে যেমন শীতের আগমনী বার্তা পাওয়া যেত, তেমনটা এখন আর মিলছে না। গ্রামগঞ্জে ভোররাতে কুয়াশার দেখা মিললেও তাতে শীতের অনুভূতি যেন নেই। কেন এমন হচ্ছে, শীত আসবে কবে— এসব প্রশ্ন অনেকের মনে উঁকি দিচ্ছে। 

অক্টোবরের মাঝামাঝি ঋতু পরিবর্তনের এ সময়ে গরমের কারণ হিসেবে আবহাওয়াবিদরা বলছেন, সাধারণত প্রতি বছর দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু দেশ অতিক্রম করার সময় বৃষ্টি নামিয়ে যায়। তবে এবার তুলনামূলক বৃষ্টি কম হয়েছে। তাই বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি। সে কারণে গরম অনুভব করছেন দেশবাসী। 
 
শীতের দেখা মিলছে কবে— এমন প্রশ্নের উত্তরে আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, শীত আসতে আরও একটু সময় লাগতে পারে। বিশেষ করে, শহরে শীতের দেখা পাওয়ার অপেক্ষার পাল্লা বেশ ভারী। অন্তত সপ্তাহ দুয়েক পর গ্রামে শীতের অনুভূতি টের পাওয়া যেতে পারে।

তিনি বলেন, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ রয়েছে। এটি সরে যাওয়ার সময় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টিপাত বৃদ্ধি পেতে পারে। ওই সময়ে আবহাওয়া কিছুটা শীতল থাকতে পারে। তবে শীতের আমেজ হয়তো পাওয়া যাবে না, কিন্তু পরিবেশ ঠান্ডা থাকতে পারে।

দেশে মূলত নভেম্বর মাসে শীতের আমেজ ভালোভাবে টের পাওয়া যায়— জানিয়ে তিনি বলেন, এবার একটু দেরি করে শীতের আমেজ পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এখনও মৌসুমি বায়ু শতভাগ শেষ হয়ে যায়নি। প্রায় এক তৃতীয়াংশ শেষ হয়েছে। এটি শেষ হলে শীত অনুভূত হতে পারে। 

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, অন্যান্য বছরের মতো শুরুতে শীতের ছোঁয়া পাওয়া যাবে উত্তরবঙ্গে। রাজশাহী, রংপুরসহ এর আশপাশের এলাকায় নভেম্বর মাসের শুরুতে কুয়াশাসহ শীত শীত অনুভূত হতে পারে। কিন্তু রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে শীতের দেখা পেতে প্রায় মাসখানেক অপেক্ষা করতে হতে পারে।

আবহাওয়া অফিসের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এখনও দেশের অনেক স্থানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত রেকর্ড করা হচ্ছে। ঢাকায় গড়ে ৩৩ থেকে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হচ্ছে। কিছু এলাকায় মেঘের দেখা মিললেও বৃষ্টি সেভাবে হচ্ছে না।

গরমের তীব্রতা মাঝে-মধ্যেই শীতের অভাবকে আরও বেশি জাগিয়ে তুলছে। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত সেই শীতের দেখা সহসাই মিলছে না।

একে/আরএইচ