রাজধানীর রূপনগর খালের দখল হয়ে যাওয়া অংশ উদ্ধারে মাঠে নেমেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। রোববার (১৭ অক্টোবর) বেলা ১১টার পর রূপনগর খাল সংলগ্ন ২৩ নম্বর রোডের সামনে থেকে দুই পাশে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান চলছে।

সম্প্রতি অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছিলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যেই দখল ছাড়তে হবে। অন‍্যথায় বিনা নোটিশে অভিযান চালিয়ে অবৈধ স্থাপনা ভেঙে-গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে।

এরই ধারাবাহিকতায় রূপনগর খালের দুই পাশে অবৈধ সব স্থাপনা উচ্ছেদের লক্ষ্যে ডিএনসিসি আকস্মিক অভিযান শুরু করেছে। যদিও অবৈধ স্থাপনাগুলো সরিয়ে নিতে আগেই সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে কয়েক দফায় জানানো হয়েছিল।

ঢাকা শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনের দায়িত্ব (খাল ও ড্রেনেজ) আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকা ওয়াসার কাছ থেকে দুই সিটি করপোরেশনকে হস্তান্তরের খালের পানি প্রবাহ ফিরিয়ে আনতে অভিযান শুরু হয়েছিল। করোনার কারণে মাঝে কিছুদিন অভিযান বন্ধ থাকার পর আজ থেকে ফের অভিযান শুরু করল ডিএনসিসি।

জানা গেছে, খাল উদ্ধার করে এর পানি প্রবাহ ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি নান্দনিকতায় খালের রূপ বদলে দিতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ডিএনসিসি। সে অনুযায়ী কাজ করছে সংস্থাটি। এর আগে, সাগুফতা খাল, রামচন্দ্রপুর খাল, ইব্রাহিমপুর খাল, গোদাগারি খাল, রূপনগর খালসহ ১৪টি খাল থেকে প্রথম দুই মাসে ৯ হাজার ৩০০ টন বর্জ্য অপসারণ করে ডিএনসিসি। চারটি নদীর সঙ্গে এসব খালের সংযোগ স্থাপন করতে চায় ডিএনসিসি। এছাড়া হাতিরঝিল থেকে কালাচাঁদপুর, বনানী কবরস্থান, কড়াইল বস্তিতে যেন নৌপথে যাওয়া যায় ওই ব্যবস্থার পাশাপাশি কয়েকটি ব্রিজ উঁচু করার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। যা স্থানীয় সরকার বিভাগে প্রক্রিয়াধীন আছে বলে জানা গেছে।

 

অন্যদিকে, জলাবদ্ধতা নিরসনে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনে ঢাকা ওয়াসার থেকে দুই সিটি করপোরেশনকে দায়িত্ব দেওয়ার পর ডিএনসিসির অধিভুক্ত খাল, কালভার্ট, স্টম ওয়াটার ড্রেন ব্যবস্থাপনা ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনায় বিভিন্ন কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি সমন্বয় সেল গঠন করেছে ডিএনসিসি।

ডিএনসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা আবুল বাশার মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, রূপনগর খাল পুনরুদ্ধার ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে রোববার থেকে অভিযানে নেমেছে ডিএনসিসি। এই অভিযানের আওতায় রূপনগর খালের দুই পাশে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করা হবে।

জানা গেছে, খাল দখলমুক্ত করা, সীমানা নির্ধারণ করে সৌন্দর্য বর্ধনে তিন ধাপে কাজ করবে ডিএনসিসি। সে ক্ষেত্রে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ এই তিন মেয়াদে কাজগুলো করা হবে। প্রথমে খাল দখলমুক্ত করে বর্জ্য অপসারণ করে পানির প্রবাহ ফেরানো হবে। এরপর খালের পাড়ে গাছ লাগানো, ওয়াকওয়ে ও সাইকেল লেনের কাজ করবে সংস্থাটি। কাগজ কলমে ডিএনসিসি এলাকায় ২৬টি খাল রয়েছে। এগুলোর দুই পাড়ের সীমানা নির্ধারণ এবং অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে খালের জায়গাগুলো উন্মুক্ত করতে প্রথমে কাজ করতে চায় ডিএনসিসি।

এএসএস/ওএফ