সাম্প্রদায়িক আঘাত দিয়ে বাংলাদেশকে দাবিয়ে রাখা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

সোমবার (১৮ অক্টোবর) শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

খালিদ মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে, তখনই এই সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী আবার নতুনভাবে আঘাত হানছে। এ আঘাত দিয়ে বাংলাদেশকে দাবিয়ে রাখা যাবে না। তারা মাথা নিচু করে, কুকুরের মতো লেজ গুটিয়ে আজকে চোরাগুপ্তা হামলা করছে। এই চোরাগুপ্তা হামলাও বন্ধ হয়ে যাবে। কারণ, বাংলাদেশের জনগণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ।

তিনি বলেন, এ সাম্প্রদায়িকতা দিয়ে বাংলাদেশকে ৭৫ থেকে আজকে ২০২১। এ দীর্ঘ ৪৬ বছর ধরে বাংলাদেশে একই গল্প শোনানো হয়েছে, সাম্প্রদায়িকতার গল্প। সংবিধানকে ক্ষত-বিক্ষত করা হয়েছে। সাম্প্রদায়িক বীজ ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। পারে নাই।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। দারিদ্র্য দূর করে যখন একটা উন্নত দেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। যখন এ বাংলাদেশ রাসেলের মতো শিশুদের জন্য একটি নিরাপদ দেশে পরিণত হচ্ছে। তখন আমরা কী দেখতে পাচ্ছি। আরেক ধরনের সাম্প্রদায়িকতা দিয়ে এই বাংলাদেশকে আবার পেছনে টেনে ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা এই অপরাধীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে না পারব; ততক্ষণ পর্যন্ত এই সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী বারবার আঘাত করতে পারে। কিন্তু পারবে না; পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট রাসেলকে হত্যা করে তারা তাদের উদ্দেশ্য হাসিল করতে পারে নাই। আজকে এই বাংলাদেশে কোটি কোটি রাসেল জন্ম নিয়েছে। এটাতো থামাতে পারেনি।

সরকারের এ প্রতিমন্ত্রী বলেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট যে জঘন্য ঘটনা, নির্মমতার যে মূল উদ্দেশ্য; মানুষ যত জানতে পারছে, ততই ওরা ঘৃণিত হচ্ছে। এরা নতুন প্রজন্মের কাছে আরও বেশি ঘৃণিত হবে। নতুন প্রজন্ম ইতিহাস জানছে, এই ইতিহাস তো জানতে দেওয়া হয় নাই। খুনি এবং অপরাধীদের পক্ষে ইতিহাস লেখা হয়েছিল, বলা হয়েছিল। রাষ্ট্রযন্ত্রকে সেভাবেই ব্যবহার করা হয়েছিল।

প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী তার সবকিছু বিসর্জন দিয়ে, সবকিছুর বিনিময়ে তিনি এ বাংলাদেশকে আজকে উন্নতির শিখরে পৌঁছে দিয়েছেন। উন্নতির শিখরে শেখ হাসিনার যে দর্শন; প্রতিহিংসা নয়, আইনের শাসন ও গণতন্ত্রকে চর্চা করে এবং একটা দেশের সার্বিক উন্নয়ন ঘটানোর মধ্য দিয়েই এই পঁচাত্তরের খুনিদের মূল উদ্দেশ্যকে কবর রচনা করা; আজকে সেই জায়গার দ্বারপ্রান্তে আমরা চলে আসছি।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ পরিবহন কর্পোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) কনফারেন্স রুমে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) আলমগীর, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব লায়লা জেসমিন, বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক, বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. তাজুল ইসলাম। 

এর আগে নৌ প্রতিমন্ত্রী সেখানে শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। পরে মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তাও কর্মচারীরা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

এইউএ/এসএম