অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে সাত দফা প্রস্তাবনা দিয়েছে সম্প্রীতি বাংলাদেশ। সোমবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে আয়োজিত এক সমাবেশ থেকে এসব প্রস্তাবনা জানান সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযুষ বন্দোপাধ্যায়।   

প্রস্তাবনার মধ্যে রয়েছে, সাম্প্রদায়িক ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে; অতীতের ঘটনার বিচার দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে; সাম্প্রদায়িক ঘটনা যেন আর না ঘটে সে জন্য প্রশাসনকে আরও তৎপর হতে হবে; সাম্প্রদায়িক ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর ও উপাসনালয়ে দ্রুত সংস্কারের ব্যবস্থা করতে হবে। 

এছাড়াও রয়েছে, শিক্ষা ব্যবস্থায় মানবিক মূল্যবোধের ও সহনশীলতার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে; আবহমান বাংলার সংস্কৃতি চর্চায় তরুণ ও যুব সমাজকে অধিকতর সম্পৃক্ত করতে যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব উসকানি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

সমাবেশে সংহতি জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী বলেন, তরুণ প্রজন্মের পেছনে বংশীবাদক কারা, সে বিষয়ে কিন্তু আমাদের ভাবতে হবে। তারুণ্যের হাত ধরেই বাংলাদেশ রক্ষা হবে। যারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করছে, তাদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে। 

মহিলা পরিষদের ঢাকা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক রেহানা ইউনুস বলেন, এ দেশ সবার। এ দেশ কোনো ধর্মের নয়। এসব ঘটনা অতীতেও ঘটেছে, কিন্তু কোনো বিচার হয়নি। এরপর যেন এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি আর না দেখতে হয়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল হাসান খান বলেন, পরিকল্পিতভাবে সারাদেশে এসব ঘটনা ঘটানো হয়েছে। আমরা যদি মনে করি, এ হামলা একটি সম্প্রদায়ের ওপর, তাহলে কিন্তু ভুল হবে। এ হামলা আমাদের সব ধর্মের ওপরেরই আসতে পারে। চক্রান্তকারীরা আগেও হামলা করেছে, এখনও করছে, ভবিষ্যতেও করবে। তাই আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে।

বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের মহাসচিব পি আর বড়ুয়া বলেন, দুর্গাপূজায় দেশের বিভিন্ন মন্দিরে হামলার ঘটনায় আমি বৌদ্ধদের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে যেন কেউ ষড়যন্ত্র না করতে পারে।

দেশের বাইরে থেকে সমাবেশে সংহতি জানান সাংবাদিক ও লেখক আবদুল গাফফার চৌধুরী। সমাবেশে সাম্প্রদায়িকতা রুখতে ৮৯টি সংগঠন সংহতি জানায়।  

এছাড়া, সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী দক্ষিণ এশীয় গণসম্মেলনের সভাপতি বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের মহাসচিব হারুন হাবিব, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শরফুদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া, চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নাছিম আখতার প্রমুখ। 
 
এমএইচএন/আরএইচ