স্কুল শিশুদের আচরণগত পরিবর্তন এবং স্বাস্থ্যবিধি মানায় সচেতনতা তৈরিতে সরকারের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে প্রচার অভিযান চালাচ্ছে ‘নিরাপদে ইশকুলে ফিরি’ ক্যাম্পেইন। দেশব্যাপী সচেতনতা বৃদ্ধি ছাড়াও ক্যাম্পেইনটি ৫৬ জেলায় ১০ হাজারের বেশি স্কুল শিশুদের করোনা থেকে সুরক্ষিত থাকার বিভিন্ন অভ্যাস তৈরিতে সাহায্য করছে।

মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে যৌথভাবে ১৯টি উন্নয়ন সংস্থার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ব্র্যাকের সিনিয়র ডিরেক্টর কেএএম মোরশেদ।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ১২ সেপ্টেম্বর সারা দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার আগে থেকেই সরকারসহ সব অংশীদারের মুখ্য অগ্রাধিকার ছিল, নিরাপদ পরিবেশে সচেতন মানসিকতা নিয়ে শিশুদের স্কুলে ফেরা নিশ্চিত করা। এই বিবেচনা থেকেই গত ১০ ফেব্রুয়ারি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ১৯টি উন্নয়ন সংস্থা সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে ‘নিরাপদ ইশকুলে ফিরি’ প্রচারাভিযান শুরু করে। শিশুদের স্কুলে ফেরা কার্যক্রম এবং তাদের শিক্ষা গ্রহণকে নিরাপদ করতে এখন জনসংযোগের সব মাধ্যম ব্যবহার করে দেশব্যাপী সচেতনতা তৈরিতে সরকারের পাশাপাশি কাজ করছে এই ক্যাম্পেইন।

কেএএম মোরশেদ বলেন, বার্তাগুলো এমনভাবে সাজানো হয়েছে যাতে যেকোনো মাধ্যমে, যেকোনো উপায়ে এটি সব শিশু এবং তাদের পরিবারের কাছে পৌঁছাতে পারে। ক্যাম্পেইনটির বার্তা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, লোক মাধ্যম ইত্যাদি ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়াও ক্যাম্পেইনের বার্তাগুলো শিশুদের আচরণগত পরিবর্তন অর্থাৎ করোনা থেকে সুরক্ষিত থাকতে নিয়মিত হাত ধোয়া, মাস্ক পরা, নিরাপদ দূরত্বে থাকা ইত্যাদি অভ্যাস তৈরিতে সাহায্য করছে।

স্ট্রমি ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি কোওর্ডিনেটর মিজানুর রহমান বলেন, এই এলায়েন্স মূলত সরকারের সঙ্গে তৃণমূলের মধ্যে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করছে। যাতে করে প্রান্তিক মানুষের চাহিদা এবং বার্তা সরকারের কাছে এবং সরকারের বিভিন্ন বার্তা তৃণমূলে যথাযথভাবে পৌঁছানো সম্ভব হয়।

তাদের কার্যক্রম সম্পর্কে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দেশব্যাপী সচেতনতামূলক প্রচারণা ছাড়াও ক্যাম্পেইন পরিচালনাকারী সংস্থাগুলো প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত স্কুলের শিক্ষকদের জন্য করোনা নিরাপত্তা বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান; স্কুলগুলোতে মাস্ক, হাত ধোয়ার/স্যানিটাইজেশন উপকরণ, থার্মাল ডিটেক্টর, শিক্ষা উপকরণসহ বিভিন্ন উপকরণ সরবরাহ; স্কুল পরিচ্ছন্ন রাখার উপায় ও ব্যবস্থা সম্পর্কে পরামর্শ দান; অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের শিশুদের শিক্ষা কার্যক্রমে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে সহযোগিতা; স্কুলকে নিরাপদ করতে সমাজের দায়িত্বশীল ব্যক্তি এবং স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির সঙ্গে আলোচনা ও পরামর্শ করা; বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিশুদেরকে পুনরায় স্কুলে পাঠানোর জন্য পরিবারের সঙ্গে আলোচনা ও উঠান বৈঠকসহ বিবিধ কার্যক্রম চালিয়ে আসছে।

প্রচার অভিযান পরিচালনাকারী উন্নয়ন সংস্থাগুলো হচ্ছে– ব্র্যাক, গণস্বাক্ষরতা অভিযান, ঢাকা আহছানিয়া মিশন, এডুকো বাংলাদেশ, এফআইভিডিবি, ফ্রেন্ডশিপ, হ্যাবিট্যাট ফর হিউম্যানিটি বাংলাদেশ, হ্যান্ডিক্যাপ ইন্টারন্যাশনাল- হিউম্যানিটি অ্যান্ড ইনক্লুশন, জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ, রুম টু রিড বাংলাদেশ, সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশ, সাইটসেভারস বাংলাদেশ, সিসেমি ওয়ার্কশপ বাংলাদেশ, স্ট্রমী ফাউন্ডেশন, টিচ ফর বাংলাদেশ, ভিএসও, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ এবং ইপসা।

ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের কমিউনিকেশন ম্যানেজার দেবাশীস রঞ্জন সরকারের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এডুকো বাংলাদেশের হেড অফ এডুকেশন গোলাম কিবরিয়া, সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর অনো ভ্যান ম্যানেন, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের কমিউনিকেশনের অ্যাডভোকেসি ডিরেক্টর টনি মাইকেল গোমেজ, সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশের অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড ক্যাম্পেইন সিনিয়র ম্যানেজার সামিয়া আহমেদ, সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশের মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন সিনিয়র ম্যানেজার নুসরাত আমীন এবং ব্র্যাকের হেড অফ মিডিয়া অ্যান্ড এক্সটার্নাল রিলেশনস রাফে সাদনান আদেল।

এমএইচএন/এমএইচএস