ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে ২১ কোটি টাকা অর্জনের অভিযোগে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের বরিশাল অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. নজরুল ইসলাম, তার স্ত্রী ও ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) দুদকের বরিশাল সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির উপ-পরিচালক এদিপ বিল্লাহ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। সংস্থাটির জনসংযোগ দফতর ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

মামলায় নজরুল ইসলামকে প্রধান আসামি এবং তার স্ত্রী শাহনাজ পারভীন ও নজরুল ইসলামের ভাই মো. তরিকুল ইসলামকে অবৈধ সম্পদ অর্জনে সহযোগিতার করার অভিযোগে আসামি করা হয়।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আসামি নজরুল ইসলাম ২০১৭ সালের ৩০ জুলাই মার্কেন্টাইল ব্যাংকের বরিশাল শাখায় সঞ্চয়ী হিসাব খোলেন। ২০২০ সালের ৫ জুলাই পর্যন্ত তিন বছরে সেখানে ৪ কোটি ৯৪ লাখ ৮৯ হাজার টাকা জমা হয়। এর মধ্যে তিনি ৪ কোটি ৯৪ লাখ ৯ হাজার টাকা উত্তোলন করেন। হিসাবটিতে মোট ৯ কোটি ৮৯ লাখ টাকা লেনদেন হয়।

অন্যদিকে ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি নজরুল ইসলামের ভাই মো. তরিকুল ইসলামের নামে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের বরিশাল শাখায় আরও একটি হিসাব খোলা হয়। সেখানেও ২০২০ সালের ৭ জুলাই পর্যন্ত ৬ কোটি ১ লাখ টাকা লেনদেন হয়। এছাড়া নজরুল ইসলামের ওই একই ব্যাংকের বরিশাল শাখায় এফডিআর হিসাবে ৩৪ লাখ ৭৩ হাজার টাকা উত্তোলনের প্রমাণ পাওয়া যায়।

অন্যদিকে তার স্ত্রী শাহনাজ পারভীনের নামে ২০১৯ সালের ৩০ মে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের বরিশাল শাখায় এক বছর মেয়াদি ৭৫ লাখ টাকার এফডিআর পাওয়া যায়। যা ২০২০ সালের মে মাসে উত্তোলন করা হয়। এছাড়া ওই ব্যাংকে শাহনাজ পারভীনের নামে পাঁচটি এফডিআর ও এসবিডিএস হিসাব পাওয়া গেছে।

সূত্র আরও জানায়, বরিশালের পূবালী ব্যাংক শাখায় ২০১৮ সালে নজরুল ইসলাম আরও একটি হিসাব খোলেন। সেখানে ১০ লাখ টাকা জমা করে তার ভাইয়ের মাধ্যমে উত্তোলন করেন। এছাড়া আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেডে নজরুল ইসলামের নামে ছয়টি এফডিআর এবং ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ১৫ বছর মেয়াদি ৮৬ লাখ টাকা ঋণ নেওয়ার তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে। যা তিনি পরিশোধ করে দেন। এছাড়া বরিশাল সদরে নিজ নামে একটি বাড়ি ও স্ত্রীর নামে বরিশাল সদরে ৮.৩৫ শতাংশ জমির তথ্য-প্রমাণ মিলেছে দুদকের অনুসন্ধানে।

এভাবে নজরুল ইসলাম, তার স্ত্রী ও ভাইয়ের ব্যাংক হিসাবে মোট ২১ কোটি এক লাখ টাকা জমা ও উত্তোলনের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়। যার কোনো বৈধ উৎস পাওয়া না যাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন- ২০১২ এর ৪ (২) ধারা এবং দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে মামলায়।

আরএম/এসকেডি