প্রতীকী ছবি

দেশের বর্তমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন ও তামাকজাত পণ্যে উচ্চ কর আরোপের দাবি উঠেছে জাতীয় সংসদে। সোমবার (২৫ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য (সিরাজগঞ্জ-৩) ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান হাবিবে মিল্লাত এ দাবি তুলেন।

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪০ সালের মধ্যে দেশকে তামাকমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন। এজন্য বর্তমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধন দরকার। তামাকের উপর এমনভাবে কর আরোপ করা দরকার, যেনো আমরা তরুণ সমাজকে এ থেকে দূরে রাখতে পারি।’

আইন সংশোধনের ক্ষেত্রে তিনি কিছু প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বর্তমান আইন সংশোধনের ক্ষেত্রে ছয়টি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি। এগুলো হচ্ছে- ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বিলুপ্তসহ সব পাবলিক প্লেস, কর্মক্ষেত্র ও পাবলিক পরিবহনে ধূমপান নিষিদ্ধ করার মাধ্যমে শতভাগ ধূমপানমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে; বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা, তামাক কোম্পানির ‘সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি’ বা সিএসআর সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা; বিড়ি-সিগারেট খুচরা শলাকা এবং প্যাকেটবিহীন জর্দা-গুল বিক্রয় নিষিদ্ধ করা; ই-সিগারেট এবং হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্টসের (এইচটিপি) মতো ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্টগুলোকে আমদানি ও বিক্রয় নিষিদ্ধ করা; এবং সবশেষে, সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার বৃদ্ধিসহ তামাকপণ্য মোড়কজাতকরণে কঠোর বিধি নিষেধ আরোপ করা।’

গ্লোবাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভের ২০১৭ তথ্যানুসারে, বাংলাদেশে ১৫ বছর ও তার বেশি বয়সীদের ৩ কোটি ৭৮ লাখ মানুষ কোনো না কোনোভাবে তামাক ব্যবহার করে। সারাবিশ্বে তামাক উৎপাদনে শীর্ষ ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৮ম। হৃদরোগ, স্ট্রোক ও ক্যান্সারের মতো অ-সংক্রামক রোগের কারণ তামাক। টোব্যাকো এটলাস ২০২০ অনুযায়ী, প্রতি বছর তামাক ব্যবহারজনিত রোগে দেশে প্রায় ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। এ বিষয়ক রোগব্যাধি, চিকিৎসা ব্যয় ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক কারণে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় ৩০ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা, যা জিডিপির ১.৪ শতাংশ।

এমন পরিস্থিতিতে এনজিও সংস্থাগুলো মনে করছে, সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ও বিশাল অংকের আর্থিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গঠনের গুরুত্ব অপরিসীম। সে ধারাবাহিকতায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিওএইচও) ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল- এফসিটিসির আলোকে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন (২০০৫) সংশোধন জরুরি।

এইচএন/এমএইচএস