পিরোজপুরের মাঠবাড়ীয়া মেডিকেল অফিসার ডা. রুবাইয়া রশিদ। ২০১৯ সালের ৫ সেপ্টেম্বর চাকরি থেকে অবসর নেন। অথচ ২০২০ সালের ১৮ জানুয়ারি পিরোজপুর পরিকল্পনা অধিদফতরের মা ও শিশু স্বাস্থ্য এবং পুষ্টি সেবা কার্যক্রমের অগ্রগতি মনিটরিং কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেছেন।

কিন্তু কীভাবে সম্ভব! বাস্তবে অসম্ভব মনে হলেও পিরোজপুরে ঘটেছে এমন অদ্ভুত ঘটনা। স্বেচ্ছায় অবসরে যাওয়া ডা. রুবাইয়া রশিদের নামে জাল স্বাক্ষর দিয়ে যাতায়াত ও সম্মানি ভাতাসহ ৩ হাজার ৪৫০ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে।

আবার পিরোজপুরের নাজিরপুর মেডিকেল অফিসার ডা. রুমানা সালাম ঢাকার মোহাম্মাদপুর ফ্যার্টিল্যাটি সার্ভিসেস অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টারে প্রেষণে কর্মরত। অথচ তাকেও পিরোজপুরে ওই একই কর্মশালায় অংশগ্রহণ দেখানো হয়। দৈনিক যাতায়াত ভাতা গ্রহণের প্রাপ্তি স্বীকার পত্রে জাল স্বাক্ষর করে প্রায় সাড়ে তিন হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে।

একই প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন সময় ২৫ জনের নামে ৬৩ হাজার টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ। অভিযোগের তির পিরোজপুর জেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসে অফিস তত্ত্বাবধায়ক সমীর কুমার মন্ডল ও উপপরিচালক রামকৃষ্ণ দাসসহ একটি সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযানেও মিলেছে অভিযোগের সত্যতা। রোববার (৭ নভেম্বর) দুদকের বরিশাল সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রাজকুমার সাহার নেতৃত্বে ওই অভিযান পরিচালনা করা হয়।

অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মোহাম্মদ শফিউল্লাহ ঢাকা পোস্টকে বলেন, পিরোজপুর জেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিস কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মা ও শিশু স্বাস্থ্য কার্যক্রম কর্মশালার প্রশিক্ষণ এবং দৈনিক ভাতার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযান পরিচালনা করেছে এনফোর্সমেন্ট টিম।

তিনি আরও বলেন, দুদক টিম সরেজমিনে পিরোজপুর জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় পরিদর্শন করে। এ সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বক্তব্য গ্রহণ করে। নথিপত্র যাচাইকালে তালিকায় বেশকিছু তথ্যে ঘষামাজার প্রমাণ পায় টিম। অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা থাকায় পূর্ণাঙ্গ অনুসন্ধানের সুপারিশসহ কার্যকরী পদক্ষেপ করবে এনফোর্সমেন্ট টিম।

দুদকে দাখিলকরা অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের ৯ এপ্রিল পরিবার পরিকল্পনার আইএম ইউনিটের মা ও শিশু স্বাস্থ্য কার্যক্রমের কর্মশালায় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানদের নিয়ে পিরোজপুর জেলায় একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। ওই কর্মশালায় ৫ জন উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু মোট ১৫ জন চেয়ারম্যানদের স্বাক্ষর জাল করে টাকা আত্মসাত হয়। এখানেও পিরোজপুর জেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসে অফিস তত্ত্বাবধায়ক সমীর কুমার মন্ডল ও উপপরিচালক রামকৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ।

আরএম/এসএম