যাত্রী কল্যাণ সমিতি নামে একটি ভুয়া সংগঠনও বিষয়টি না জেনে, না বুঝে যা নয় তা সমালোচনা করছে বলে দাবি করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

এর আগে পরিবহন মালিক সমিতি ও শ্রমিক ফেডারেশনের নেতারা পুনর্নির্ধারিত হারে ভাড়া আদায়ের প্রতিশ্রুতি দিলেও বিভিন্ন পরিবহনে অধিক হারে ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে করা এক ব্রিফিংয়ে মঙ্গলবার (৯ অক্টোবর) সচিবালয়ে নিজ দফতরে তিনি এ কথা বলেন।

মালিক শ্রমিক ফেডারেশনের নেতাদের পুনর্নির্ধারিত হারের চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় এবং যাত্রী ভোগান্তি থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, তা না হলে দায়ী পরিবহনের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য বৃদ্ধিতে সরকার শুধু ডিজেলচালিত পরিবহনের ভাড়া পুনর্নির্ধারণ করছে। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিরুদ্ধে আজ থেকে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে বিআরটিএ’র মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে দেশব্যাপী অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য মাঠ পর্যায়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, হাইওয়ে পুলিশ ও জেলা পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ বিষয়ে কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান মন্ত্রী।

আবারও মালিক ও শ্রমিক নেতাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ভাড়া আদায়ের অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, তা নাহলে সরকার কঠোর ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে। কিছু কিছু গণমাধ্যম দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করলেও দু-একটি গণমাধ্যম বিরূপ ও অপমানজনক সমালোচনা করছে, যা প্রত্যাশিত নয়।

ওবায়দুল কাদের বলেন, অন্যদিকে কেউ কেউ পাতানো খেলা বলছে, অনেকেই আঁতাতের গন্ধও খুঁজে পেয়েছেন। যাত্রী কল্যাণ সমিতি নামে একটি ভুয়া সংগঠনও বিষয়টি না জেনে, না বুঝে সমালোচনা করছে।

প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, তাহলে পরিবহন ধর্মঘট অব্যাহত থাকলে সেটা কী জনগণের জন্য কল্যাণকর হতো? সেক্ষেত্রে মন্ত্রী মনে করেন যাত্রী ভোগান্তি কমাতে অতীতের ধারাবাহিকতায় গণমাধ্যমের মূল্যবান পরামর্শ অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ।

আওয়ামী লীগের এই শীর্ষ নেতা বলেন, বিএনপির আমলে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি ছিল নৈমিত্তিক ঘটনা, সেটা বিএনপি ভুলে গেলেও জনগণ ভুলেনি। বিএনপির পাঁচ বছরে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছিল আটবার। তারা দাম কমাতে পারেনি। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কম থাকলেও দেশে তারা দাম বাড়িয়েছিল।

আওয়ামী লীগ গত ১৩ বছরে ৫ বার মূল্য বৃদ্ধি করলেও ৫ বার মূল্য হ্রাসও করেছে উল্লেখ করে কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণের ৭ দিনের মধ্যে জ্বালানি তেলের মূল্য হ্রাস করেছিলেন।

দেশ যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, দুর্ভিক্ষ চলছে এবং জনগণের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে- বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, আসলে এসব নেতিবাচক বক্তব্য একটি দায়িত্বহীন রাজনৈতিক দলে হতাশার বহিঃপ্রকাশ ছাড়া আর কিছু নয়।

তিনি বলেন, জনগণের পিঠ দেয়ালে ঠেকেনি, দেশের জনগণ এগিয়ে চলছে সম্মুখপানে, এমনটা মনে করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে বিএনপির। বিএনপির অন্ধ বিষোদগার আর মিথ্যাচারের রাজনীতি তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যতকে করেছে চরম অনিশ্চিত ও বর্তমানকে করেছে ধোঁয়াশাচ্ছন্ন।

এর আগে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক-এডিবির বাংলাদেশের নতুন কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিন্টিং এবং বিদায়ী কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশের নেতৃত্বে এডিবির একটি প্রতিনিধি দল ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে দেশে এডিবির সহায়তায় যেসব প্রকল্পের কাজ চলমান সেগুলোর অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়।

এইউএ/এমএইচএস