স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে কপ-২৬ সম্মেলনের প্রাথমিক খসড়া ঘোষণায় জলবায়ু পরিবর্তন বা বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ঠেকাতে সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতির বদলে আবারও কথার ফুলঝুরি নিয়ে হাজির হয়েছেন বিশ্ব নেতারা।

সম্মেলনে বাংলাদেশসহ জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে বছরপ্রতি ১০০ বিলিয়ন ডলার তহবিল দেওয়ার বিষয়টি উন্নত দেশগুলোর কথার মারপ্যাঁচে এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান জলবায়ু সম্মেলনের প্রাথমিক খসড়া ঘোষণা সম্পর্কে হতাশা জানিয়ে বলেন, কপ-২৬ সম্মেলন শুরুর আগে বিশ্ব নেতারা বৈশ্বিক উষ্ণায়ন রোধে একটি কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে যে উচ্চাশা তৈরি করেছিলেন, তার বড় অংশই পূরণ হয়নি। বরং ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণায়ন লক্ষ্যমাত্রাকে অযৌক্তিক ও অনৈতিকভাবে ২ ডিগ্রিতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, জ্বালানি হিসেবে কয়লার ব্যবহার বন্ধে সুনির্দিষ্ট টাইমলাইন রাখা হয়নি। একইভাবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য অভিযোজন এবং ক্ষয়ক্ষতিসহ (লস অ্যান্ড ড্যামেজ) প্রতিশ্রুত শত কোটি ডলার বাৎসরিক জলবায়ু তহবিল প্রদানের নিশ্চয়তা দিতে উন্নত দেশগুলো আবারও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। অথচ প্যারিস চুক্তির আওতায় ২০২০ সাল থেকে প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন ডলার প্রদানের কথা ছিল। এখন পর্যন্ত সর্বসাকুল্যে ৮০ বিলিয়ন ডলার দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে সর্বোচ্চ ২০ বিলিয়ন ডলার জলবায়ু তহবিল।

প্যারিস চুক্তিতে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য অভিযোজন খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হলেও জলবায়ু অর্থের মাত্র ২৫ শতাংশ এ খাতে পাওয়া গেছে। আর নতুন খসড়ায় যা বৃদ্ধিতে কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি বলেও মন্তব্য করেছে টিআইবি।

ড. জামান আরও বলেন, প্যারিস চুক্তিতে লস অ্যান্ড ড্যামেজকে অভিযোজন থেকে আলাদা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। কিন্তু উন্নত দেশগুলো জলবায়ু অর্থায়ন সংক্রান্ত আর্থিক প্রতিবেদনে দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় প্রদত্ত সহায়তা একটি পৃথক কলামে উল্লেখ করত না।

তিনি বলেন, এবার বিষয়টি নিয়ে স্বল্পোন্নত দেশগুলো জোর দাবি তুললেও, উন্নত দেশগুলোও দুর্যোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এই যুক্তি দেখিয়ে লস অ্যান্ড ড্যামেজ মেকানিজমের আওতায় উন্নয়নশীল দেশগুলোর ক্ষতিপূরণের অর্থ পাওয়া নিয়ে নতুন প্রশ্ন তুলেছে। আমরা আশা করব এই অবস্থান থেকে সরে এসে উন্নত দেশগুলো ক্ষতিপূরণের বিষয়টিতে একমত হবে এবং দ্রুত এর বাস্তবায়ন হবে।

আরএম/এমএইচএস