দেশে ফেরার সময় বিদেশ থেকে অনেকে সোনা নিয়ে আসেন। কেউ সোনার বার আনেন কেউ আনেন স্বর্ণালংকার। সোনা বহনকারীদের অধিকাংশই বিক্রির জন্য এসব নিয়ে আসেন। অতিরিক্ত পরিমাণে আনার কারণে সেগুলো জব্দ করা হয় বিমানবন্দরেই। অনেকক্ষেত্রে আটক করা হয় যাত্রীকে। মামলা দিয়ে পাঠানো হয় জেলে।

বাংলাদেশের কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের কমিশনার (চট্টগ্রাম বিভাগ) মোহাম্মদ বেলাল হোসেন চৌধুরী জানান, বিদেশ থেকে সোনা আনার ক্ষেত্রে যাত্রীদের ‘প্যাসেঞ্জার ব্যাগেজ রুলস-২০১৬’ মানতে হবে। আমাদের দেশে কখনো স্বর্ণের মূল মালিক ধরা পড়ে না। শুধুমাত্র বাহকরা ধরা পড়ে। তবে, ব্যাগেজ রুলস মেনে স্বর্ণ আনলে তাদের এ অবস্থা হতো না।

সোনার বার আনার নিয়ম
বাংলাদেশের প্যাসেঞ্জার ব্যাগেজ রুলস-২০১৬ অনুযায়ী, একজন যাত্রী সর্বোচ্চ ২৩৪ গ্রাম ওজন সমপরিমাণ স্বর্ণের বার আনতে পারেন। তবে এজন্য তাকে বিমানবন্দরে নেমেই কাস্টসমসের নির্ধারিত ফরম পূরণ করে স্বর্ণের বিষয়টি জানাতে হবে এবং শুল্ক-কর পরিশোধ করতে হবে। বার আনার ক্ষেত্রে প্রতি ১১.৬৭ গ্রামের জন্য ২০০০ টাকা করে শুল্ক পরিশোধ করতে হবে। তবে কেউ ২৩৪ গ্রাম ওজনের বেশি আনলে কাস্টমস সোনা এবং বহনকারীকে আটক করবে।
এছাড়াও কেউ যদি ঘোষণা না দিয়ে সোনা নিয়ে গ্রিন চ্যানেল অতিক্রম করতে থাকে তাহলে সেটা চোরাচালান হিসেবে গণ্য হবে। সেসময় তাকে শুল্ক ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগে শুল্ক এবং শুল্কের দিগুণ পরিমাণ জরিমানা করা হবে। এ ক্ষেত্রে মামলার দীর্ঘসূত্রীতায় সোনার বার পেতে অনেক সময় লাগতে পারে। তবে ঘোষণা দিয়ে নির্ধারিত শুল্ককরাদি পরিশোধ করলে খুব সহজেই বহনকরা স্বর্ণবারটি নিয়ে যেতে পারবেন যাত্রীরা।

স্বর্ণালংকার আনার বিধান
কোনো ধরনের শুল্ক কর না দিয়েই (শুল্কমুক্ত সুবিধা) একজন যাত্রী সর্বোচ্চ ১০০ গ্রাম স্বর্ণালংকার আনতে পারবেন। তবে কোনো অলংকারের সংখ্যা ১২টির বেশি হবে না। কেউ যদি ১০০ গ্রামের বেশি স্বর্ণালংকার আনেন সেক্ষেত্রে তাকে অতিরিক্ত প্রতি গ্রাম এর জন্য প্রায় ২০০০ টাকা শুল্ক পরিশোধ করতে হবে।

তবে স্বর্ণালংকারের পরিমাণ অস্বাভাবিক বা বাণিজ্যিক বলে মনে হলে কাস্টমস তা আটক করবে। আটক হওয়া স্বর্ণালংকার পরবর্তী সময়ে শুল্ক-করাদি এবং জরিমানা পরিশোধ করে ফেরত দেওয়া হয়। তবে স্বর্ণালংকারের পরিমাণ যদি ‘চোরাচালান’ বলে মনে হয় সেক্ষেত্রে কাস্টমস সেগুলো আটক করে বাহকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করবে।

এআর/এসএম