গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের জন্য ‘হাফ পাস’ (অর্ধেক ভাড়া) নিশ্চিত করা, জ্বালানি তেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমানো ও বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহারের দাবিতে রাজধানীর নীলক্ষেত মোড়ে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে ৮টি প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের আয়োজনে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেয় বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলনের নেতা কর্মীরা। 

এর আগে বেলা ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি টিএসসি ঘুরে নীলক্ষেতে এসে বিক্ষোভ সমাবেশে মিলিত হয়। নীলক্ষেত মোড়ে দেড় ঘণ্টা ধরে সমাবেশ চলে। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল সায়েন্সল্যাব মোড়, কাঁটাবন, শাহবাগ মোড় ঘুরে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের সামনে এসে শেষ হয়। 

বিক্ষোভ সমাবেশে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি মাসুদ রানার সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা, বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি ইকবাল কবীর, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক মিখা পেরেগু, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সহ-সভাপতি সায়েদুল হক নিশান, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মিতু সরকার, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের দফতর সম্পাদক শুভাশীষ চাকমা ও বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলনের সভাপতি তৌফিকা প্রিয়া।

সমাবেশে ছাত্রনেতারা বলেন, সরকার পরিবহন খাতের সামগ্রিক নৈরাজ্য জারি রেখে ভাড়া বৃদ্ধির বোঝা জনগণের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে। পরিবহন খাতের মাফিয়া এবং চাঁদাবাজের দৌরাত্ম্য ঠেকানোর কোনো পদক্ষেপ সরকারের নেই। আন্তর্জাতিক বাজারের অজুহাতে দাম বৃদ্ধি করলেও আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমলে বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহার করা হয় না। এগুলো সরকারের গণবিরোধী চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ।

ছাত্রনেতারা আরও বলেন, অবিলম্বে শিক্ষার্থীদের হাফ পাসের প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। প্রজ্ঞাপন জারি করলে ছাত্রদের সাথে পরিবহন শ্রমিকদের অকারণ বাকবিতণ্ডা তর্ক-বিতর্ক, মারামারি বন্ধ হবে। শহরের গণপরিবহনে কোনো সিটিং সার্ভিস চলবে না। ওয়েবিল চেকিংয়ের নামে বাড়তি ভাড়া নেওয়া বন্ধ করতে হবে, কিলোমিটারপ্রতি ভাড়া নিতে হবে। ন্যূনতম ভাড়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করতে।

ছাত্রনেতারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের দাবি না মানলে বৃহত্তর আন্দোলন কর্মসূচি নেওয়া হবে।

সায়েন্সল্যাব মোড়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ছাত্রলীগের হামলা প্রসঙ্গে নেতৃবৃন্দ জানান, শিক্ষার্থীদের প্রত্যেকটি আন্দোলনে এবং যেকোনো গণআন্দোলনে ছাত্রলীগ চাপাতি, হেলমেট, হাতুড়ি, লাঠিসোটা নিয়ে হামলা করে। ভোট ডাকাতির সরকারের যেকোনো গণবিরোধী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের বিরুদ্ধে যেকোনো গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমনে ছাত্রলীগ এবং পুলিশের ভূমিকা একই। আন্দোলনে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজের বৃহত্তর প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান ছাত্রনেতারা।

এছাড়াও নীলক্ষেত মোড়ের সমাবেশ থেকে আগামী ২৯ নভেম্বর (সোমবার) শাহবাগ-সহ বিভিন্ন স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে সড়ক অবরোধ কর্মসূচিও ঘোষণা করা হয়।

আরএইচটি/এইচকে